আজাদ স্পোর্টিং

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২:২৭ এএম

আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব: ঢাকার এক ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সংস্থা

আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব, বাংলাদেশের ঢাকা শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সংস্থা। ১৯৪৯ সালে বাঙালি লেখক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবটি পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি ফুটবলের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত। প্রখ্যাত শিল্পী কামরুল হাসান ক্লাবের কিট ডিজাইন করেছিলেন। এম এ কাইয়ুম ও আনোয়ার হোসেন ক্লাবের প্রথম সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

আজাদ স্পোর্টিং দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে অংশগ্রহণ করে। ১৯৫০ সালে তারা ফায়ার সার্ভিস এসসি'র সাথে যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে উন্নীত হয়। ১৯৫৮ সালে সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তারা তাদের একমাত্র ঢাকা লিগ শিরোপা জিতে নেয়। তাজুল ইসলাম মান্না সে বছর লিগের শীর্ষ গোলদাতা ছিলেন। ১৯৮৫ সালে ক্লাবটি অবনমিত হয় এবং শতাব্দীর শুরু থেকেই ঘরোয়া ফুটবলের পরিসীমায় নিষ্ক্রিয় ছিল।

ফুটবল ছাড়াও আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব ক্রিকেট, হকি, ভলিবল ও কাবাডিতেও অংশগ্রহণ করে। আক্রম খান ও সাকিব আল হাসানের মতো জাতীয় ক্রিকেটাররা এই ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে ক্লাবটি ভলিবলে রানার্স-আপ হয়। হকিতে তারা প্রিমিয়ার বিভাগে নিয়মিত অংশগ্রহণকারী ছিলেন যদিও লিগ শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা তাদের নেই। ২০১৫ সালে ক্লাবটির মহিলা কাবাডি দল প্রথম উন্মুক্ত মহিলা বিচ কাবাডি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়।

তাজুল ইসলাম মান্না ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। তিনি ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত আজাদ স্পোর্টিং এর হয়ে খেলেছেন। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছে: তারাপদ রায়, রঞ্জিত দাস, এসএ জাম্মন মুক্তা, জলিল আনসারী, মনোয়ার হোসেন নান্নু, শহীদুর রহমান শান্তু, আনজাম হোসেন, ইহতেশাম, হাবিব আহমেদ, সালাম মুর্শেদী, মারি চৌধুরী, খন্দকার নুরুন্নবী, ইলিয়াস হোসেন, মোঃ কামরুজ্জামান, আনোয়ার হোসেন, খন্দকার আবুল হাসান এবং সুবল দাস। শেখ মনসুর আলী লালু, যিনি পরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, তিনিও আজাদ স্পোর্টিং থেকে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন।

আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের ইতিহাস ও অবদান বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে উল্লেখযোগ্য। যদিও বর্তমানে তারা ফুটবলে নিষ্ক্রিয়, অন্যান্য খেলায় তাদের অংশগ্রহণ একটি ঐতিহ্যের ধারক।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত
  • ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে অংশগ্রহণ
  • ১৯৫৮ সালে ঢাকা লিগ শিরোপা জয়
  • ফুটবল ছাড়াও ক্রিকেট, হকি, ভলিবল ও কাবাডিতে অংশগ্রহণ
  • তাজুল ইসলাম মান্না ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।