হেরোইন: একটি বিশ্লেষণ
হেরোইন (ডাইঅ্যাসিটাইলমরফিন), আফিম গাছ থেকে উৎপন্ন মরফিনের একটি রাসায়নিক পরিবর্তিত রূপ। এটি একটি অত্যন্ত উচ্চমাত্রার আসক্তি সৃষ্টিকারী মাদক। ১৮৭৪ সালে সি. আর. এডলার রাইট প্রথম হেরোইনের সংশ্লেষণ করেন। Bayer কোম্পানি ১৮৯৮ সাল থেকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত এটিকে কাশি নিরাময়ের ঔষধ হিসাবে বাজারজাত করেছিল। পরবর্তীতে এর আসক্তি সৃষ্টিকারী প্রকৃতি বোঝা গেলে এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
বিশ্বজুড়ে হেরোইনের ব্যবহার একটি ব্যাপক সমস্যা। এর আসক্তি গভীর, এবং এর প্রভাব শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই বিধ্বংসী। আফগানিস্তান, বার্মা এবং মেক্সিকো সহ বিভিন্ন দেশে হেরোইনের উৎপাদন এবং কাঠামোর বিস্তৃত নেটওয়ার্ক বিদ্যমান। এই অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত অনেক আন্তর্জাতিক অপরাধী সংগঠন।
হেরোইন সাধারণত শিরায় ইনজেকশন, নাক দিয়ে শোষণ, ধূমপান অথবা শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। এর প্রভাব দ্রুত শুরু হয় এবং কিছুক্ষণ স্থায়ী হয়। হৃৎপিণ্ডের গতি কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, ঘুম ঘুম ভাব, মানসিক কার্যক্ষমতা হ্রাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি এর কিছু প্রভাব। আসক্তি ছাড়ার সময় অনেক প্রতিকূল শারীরিক ও মানসিক প্রভাব দেখা যায়।
হেরোইনের আসক্তি চিকিৎসার জন্য বিশেষ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন প্রয়োজন। Methadone এবং Buprenorphine সহ বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করা হয়। হেরোইন ওভারডোজের ক্ষেত্রে Naloxone প্রয়োজন হতে পারে।
২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ অপিয়েড ব্যবহার করে, যার মধ্যে হেরোইন সবচেয়ে সাধারণ। হেরোইন ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর অসংখ্য মৃত্যু ঘটে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।
হেরোইন একটি মারাত্মক মাদক, যা মানব জীবন এবং সমাজের জন্য বড় ধরণের হুমকি সৃষ্টি করে। এর উৎপাদন, বিক্রয় এবং ব্যবহার সর্বত্র নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং প্রচার এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অত্যন্ত জরুরি।