আশরাফুল আলম সাঈদ, যিনি ‘হিরো আলম’ নামে বেশি পরিচিত, একজন বাংলাদেশী গায়ক, অভিনেতা, মডেল, রাজনীতিবিদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তারকা। তিনি স্বাধীন শিল্পী হিসেবে কাজ করেন এবং তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে ১৬ লক্ষেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তার বেসুর গান ও অভিনয়ের জন্য তিনি সমালোচিত হলেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারী বগুড়া জেলার সদর উপজেলার এরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আশরাফুল আলম সাঈদ। পারিবারিক অভাবের কারণে তাকে একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারে পালক সন্তান হিসেবে লালন-পালন করা হয়। ৭ম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তিনি জীবিকার জন্য সিডি বিক্রি শুরু করেন এবং পরে ক্যাবল ব্যবসায় জড়িত হন।
২০১৬ সালের দিকে তার ইউটিউবে আপলোড করা সঙ্গীত ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় এবং তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। মুশফিকুর রহিমসহ বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি তারকা তার সাথে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। বিবিসি হিন্দি, জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডেসহ ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে তার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
২০১৭ সালে 'মার ছক্কা' নামে তার প্রথম ছবি মুক্তি পায়। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন, পরে মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন এবং পরাজিত হন। তিনি পরবর্তীতে বিভিন্ন উপনির্বাচনেও প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন, কিন্তু পরাজিত হন। ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলার শিকার হন এবং ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। ২০১৯ সালে একুশে বইমেলায় তার আত্মজীবনী “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমরা সমাজকে বদলে দেবো” প্রকাশিত হয়।
২০২২ সালে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা হিরো আলমকে তাদের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যায় এবং রবীন্দ্র ও নজরুল গীতি বিকৃত করে গাওয়া এবং পুলিশের পোশাক পরিধানের জন্য মুচলেকা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। হিরো আলম পুলিশের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন ও বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ আনেন।
আশরাফুল আলম ব্যক্তিগত জীবনে সাবিহা আক্তার সুমির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ এবং তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ২০১৯ সালে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার হন এবং পরে জামিনে মুক্তি পান।