হাসিবুল হোসেন: বাংলাদেশী ক্রিকেটের এক অম্লান নক্ষত্র
মোহাম্মদ হাসিবুল হোসেন, বাংলাদেশের একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার, যিনি ১৯৭৭ সালের ৩ জুন মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় জন্মগ্রহণ করেন। ‘শান্ত’ ডাকনামে পরিচিত এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং ও ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে দক্ষ হাসিবুল দলে মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকা পালন করতেন।
তার পিতা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন, ফলে তার শৈশব কেটেছে ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে। অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটারদের সাথে খেলায় তার প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে যোগদানের সূচনা হয়। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে বহুবছর খেলে তিনি ১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশী ক্রিকেটের জন্য একমাত্র আশার আলো হিসেবে বিবেচিত হন।
১৯৯৫ সালে শারজায় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তার একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক হয়। অভিষেক ম্যাচেই রোশন মহানামাকে আউট করে তিনি দর্শকদের মন জয় করে নেন। ১৯৯৯ সালে ঢাকায় কেনিয়ার বিরুদ্ধে ৪/৫৬ লাভ করে নিজস্ব সর্বোত্তম বোলিং পরিসংখ্যান তৈরি করেন। তিনি ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপেও অংশ নিয়ে এডিনবরায় স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২/২৬ উইকেট নিয়ে দলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ে অবদান রাখেন।
টেস্ট ক্রিকেটে তার সাফল্য কম ছিল। তিনি পাঁচটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন, কিন্তু কোন ইনিংসে দুইয়ের বেশি উইকেট নিতে পারেননি। তবুও ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় ইনিংসে সদাগোপান রমেশকে বোল্ড করে তিনি বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে স্মরণীয় প্রথম টেস্ট উইকেট লাভ করেন।
২০০০ সালে হাঁটুতে আঘাতের পর তার বোলিংয়ের কার্যকারিতা কমে যায় এবং ২০০৩ সালে তিনি দল থেকে বাদ পড়েন। ২০০৪ সালে শেষবারের মতো ওডিআই খেলেন।
খেলোয়াড়ী জীবনের পর হাসিবুল ব্যবসার সাথে জড়িত এবং সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার রঞ্জন দাসের নেতৃত্বাধীন কিশোরগঞ্জভিত্তিক এক ক্রিকেট একাডেমিতে মেহরাব হোসেনের সাথে কোচিং করছেন। আমরা আশা করি, হাসিবুল হোসেনের ক্রিকেট জীবন ও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে আরো তথ্য পাওয়া গেলে আমরা এই লেখাটি আরও সমৃদ্ধ করব।