টেস্ট ক্রিকেট

টেস্ট ক্রিকেট: ক্রিকেটের সর্বোচ্চ স্তরের প্রতিযোগিতা

টেস্ট ক্রিকেট ক্রিকেটের দীর্ঘতম ও সর্বোচ্চ মানদণ্ডের খেলা হিসেবে পরিচিত। ক্রিকেট অনুরাগীদের কাছে এটিকেই প্রকৃত ক্রিকেট বলে মনে করা হয়। একটি দলের ক্রিকেট ক্ষমতা মূল্যায়নের প্রধান মানদণ্ড হল টেস্ট ক্রিকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) কর্তৃক স্বীকৃত টেস্ট মর্যাদাসম্পন্ন দেশগুলি এতে অংশ নেয়। প্রতি দলে ১১ জন করে খেলোয়াড় থাকে এবং সর্বোচ্চ পাঁচ দিন ধরে খেলা চলে।

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাস:

প্রথম টেস্ট খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৫-১৯ মার্চ, ১৮৭৭ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি), অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে। অস্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে জয়ী হয়েছিল। টেস্ট ক্রিকেটের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৯৭৭ সালেও একই ভেন্যুতে একই ফলাফলে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল। ২০১২ সালে আইসিসি দিবা-রাত্রির টেস্টের প্রবর্তন করে, যার প্রথম আয়োজন হয় ২০১৫ সালে অ্যাডিলেড ওভালে।

টেস্ট মর্যাদা:

আইসিসি নতুন দেশের টেস্ট মর্যাদা প্রদানের বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করেছে। আন্তঃমহাদেশীয় কাপের বিজয়ী দল যদি এক টেস্ট দলকে পরাজিত করতে পারে, তাহলে তাদের টেস্ট মর্যাদা দেওয়া হবে। বর্তমানে ১২টি দেশ টেস্ট মর্যাদা উপভোগ করছে। আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড ২০১৭ সালে টেস্ট মর্যাদা পেয়েছে।

টেস্ট ক্রিকেটের নিয়মাবলী:

টেস্ট ক্রিকেটের এক দিনে তিনটি অধিবেশনে দুই ঘণ্টা করে মোট ছয় ঘণ্টা খেলা হয়। খারাপ আবহাওয়ার কারণে খেলা বন্ধ থাকলে অধিবেশনের সময় সমন্বয় করা হয়। ৮০ ওভার শেষে বোলিং দল নতুন বল নিতে পারে।

টেস্ট ক্রিকেটের ফলাফল:

টেস্ট খেলার ছয় ধরনের ফলাফল সম্ভব: জয়, পরাজয়, ড্র, টাই, অনির্দিষ্ট, এবং ফলো-অন।

টেস্ট সিরিজ:

টেস্ট ক্রিকেটের খেলাগুলি সাধারণত সিরিজ আকারে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে এক থেকে সাতটি খেলা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। আইসিসি বর্তমানে ঘূর্ণায়মান সিরিজ ব্যবস্থা অনুসরণ করে।

টেস্ট ক্রিকেটের উল্লেখযোগ্য ঘটনা:

  • প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান (১৬৫ রান)।
  • প্রথম শতরানের জুটি গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের ডব্লিউ. জি. গ্রেস ও এ. পি. লুকাস।
  • এক ইনিংসে ৪০০ রান করার কীর্তি গড়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রায়ান লারা।
  • সবচেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরি করেছেন ভারতের শচীন তেন্ডুলকর (৫১)।

টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ:

আইসিসি টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যেমন দিবা-রাত্রির টেস্ট এবং বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ।

মূল তথ্যাবলী:

  • টেস্ট ক্রিকেট ক্রিকেটের দীর্ঘতম ও সর্বোচ্চ মানের খেলা
  • ১৮৭৭ সালে প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়
  • আইসিসি কর্তৃক স্বীকৃত ১২টি দেশ টেস্ট ক্রিকেট খেলে
  • টেস্টে জয়, পরাজয়, ড্র, টাই, অনির্দিষ্ট ও ফলো-অন ফলাফল সম্ভব
  • দিবা-রাত্রির টেস্ট ও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেস্টের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য