হাসিনুর রহমান

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৪:৩৯ এএম

লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান: একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব

হাসিনুর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এর সাবেক অধিনায়ক। তিনি সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর থেকে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। ২০১৮ সালে তিনি অপহরণের শিকার হন এবং ১৬ মাস পর ২০২০ সালে ফিরে আসেন। তার অপহরণ ও পরবর্তী ঘটনাগুলি বাংলাদেশে গুমের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হয়।

হাসিনুর রহমান ১৯৮৪ সালের জুনে বাংলাদেশ সামরিক একাডেমির দশম লম্বা কোর্সে কমিশন পান। তার কর্মজীবনের বিভিন্ন সময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারী, বাংলাদেশ রাইফেলসের কমান্ডার থাকাকালীন সময়ে তিনি আদিবাসী বিদ্রোহীদের সাথে গুলিবর্ষণের পর ৪০টি ব্যক্তিবিরোধী ও ট্যাংক বিরোধী মাইন, রকেট লঞ্চার এবং চার্জার জব্দ করেন। তিনি রাজশাহীতে র‍্যাব-৫ এর কমান্ডিং অফিসার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, তিনি র‍্যাব-৫ এর দুটি দল নিয়ে চট্টগ্রামে আসেন এবং র‍্যাব-৭ এর কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেন। পরবর্তীতে তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় র‍্যাব-৭ এর অতিরিক্ত একটি দল নিয়ে যান, যেখানে বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি দল তাদের সাথে যোগ দেয়। এই অভিযানে তারা ২০টি AK-47 রাইফেল এবং প্রায় ৮ হাজার গুলি উদ্ধার করেন। ২০০৫-০৬ সালে তিনি চট্টগ্রামে র‍্যাব-৭ এর কমান্ড করেছিলেন। নভেম্বর ২০০৬-তে কক্সবাজারে বোমা উদ্ধার করেন এবং এপ্রিল ২০০৬-তে জামায়াত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশের সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অপারেশন পাহাড়তলী পরিচালনা করেন।

বিদ্রোহের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে হাসিনুর রহমানকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়। সে সময় তিনি সেনা প্রশিক্ষণ ও নীতি কমান্ডে কর্মরত ছিলেন এবং দেশদ্রোহিতার অভিযোগেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তিনি ২৩ জন অবসরপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান করেন।

তার অপহরণের বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। তার পরিবারের অভিযোগ, ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট ১৪-১৫ জন ব্যক্তি তাকে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তার অপহরণের ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পুলিশ তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল উদ্ধার করে এবং তার লাইসেন্সকৃত শটগানের সন্ধানে তার বাসা তল্লাশি করে। ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী তিনি বাসায় ফিরে আসলেও তখন তার মানসিক অবস্থা সুস্থ ছিল না বলে তার পরিবারের দাবি। তিনি দাবি করেন যে তাকে ডিজিএফআই এর গোপন কারাগার আয়নাঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। তার পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বক্তব্যগুলিও সমালোচনার সম্মুখীন হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও র‍্যাব কর্মকর্তা
  • ২০১৮ সালে অপহরণ ও ১৬ মাস পর ফিরে আসা
  • সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত
  • জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান
  • গুমের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত
  • বিতর্কিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।