হাসপাতাল: জীবন রক্ষার আশ্রয়স্থল
মানব সভ্যতার ইতিহাসের সাথে সাথেই হাসপাতালের উত্থান ও উন্নয়ন ঘটেছে। প্রাচীনকালে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেই প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল। কালক্রমে চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে হাসপাতালগুলোর গঠন, ব্যবস্থাপনা এবং সেবা উন্নত হতে থাকে।
প্রাচীনকালের উল্লেখযোগ্য হাসপাতালের মধ্যে রয়েছে গুন্ডেশাপুরের হাসপাতাল (২৭১ খ্রিস্টাব্দ), কনস্টান্টিনোপলের সেন্ট স্যাম্পসন এবং সিজারিয়ার হাসপাতাল (৩২৫ খ্রিস্টাব্দ পর), এবং বাগদাদের হাসপাতাল (৮০৫ খ্রিস্টাব্দ)। বাংলাদেশে আধুনিক হাসপাতালের ইতিহাস শুরু হয় ১৮৩৬ সালে স্যার রবার্ট মিটফোর্ডের উইলের মাধ্যমে, যার ফলে ১৮৫৪ সালে ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের হাসপাতাল রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে কুমুদিনী হাসপাতাল (১৯৩৮), ক্রিশ্চিয়ান মিশন হাসপাতাল (১৮৮৭) উল্লেখযোগ্য। বিশেষ উল্লেখযোগ্য ভাসমান হাসপাতাল 'জীবন তরী' (১৯৯৯) যা দেশের দুর্গম এলাকার মানুষদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল যেমন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল (১৯৭২), বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (১৯৫৫), জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান এবং মানসিক হাসপাতাল (১৯৫৭) গড়ে উঠেছে।
এই হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা সেবা, অপারেশন, ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা, এবং পুনর্বাসন প্রকল্প উপলব্ধ। তবে জনসংখ্যার তুলনায় হাসপাতালের সংখ্যা এখনও অপর্যাপ্ত। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর জন্য আরও ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।