হামিদ কারজাই: আফগানিস্তানের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা
২৪ ডিসেম্বর ১৯৫৭ সালে আফগানিস্তানের কান্দাহারে জন্মগ্রহণকারী হামিদ কারজাই আফগানিস্তানের ইতিহাসের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। পশতুন সম্প্রদায়ের পোপালজাই দুরানি গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে তিনি ২০০১ সালে তালেবানদের পতনের পর আফগান রাজনীতিতে একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে দুইবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হন।
কারজাইয়ের প্রাথমিক জীবন কান্দাহার এবং কাবুলে কাটে। তিনি কাবুলের হাবিবিয়া হাই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে ভারতের হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় তিনি আফগান বিদ্রোহীদের জন্য অর্থ সংগ্রহে কাজ করেছেন। তিনি বুরহানউদ্দিন রাব্বানির সরকারের উপ-বিদেশমন্ত্রী হিসেবেও সংক্ষিপ্ত সময় কাজ করেছেন।
২০০১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান আক্রমণের পর কারজাই আফগান রাজনীতিতে একজন প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। বোন্ন চুক্তির অধীনে তিনি আন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের প্রধান নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে ঐতিহ্যবাহী লইয়া জিরগা তাকে আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে।
কারজাইয়ের রাষ্ট্রপতি কার্যকালে আফগানিস্তান নানা রকম চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। তালেবানদের পুনরায় উত্থান, দুর্নীতি, ও সহিংসতা ছিল তার মূল সমস্যা। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে দেশ পুনর্গঠনের চেষ্টা করেন। তার রাষ্ট্রপতি কার্যকালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর কারজাই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং তালেবানদের সাথে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। ২০২১ সালে কাবুল পতনের পর তিনি তালেবান নেতাদের সাথে শান্তি আলোচনার চেষ্টা করেন। তিনি তালেবানদেরকে তাদের ভাই বলে উল্লেখ করেছেন এবং নারীদের অধিকার, শিক্ষা ও কাজের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
হামিদ কারজাই আফগানিস্তানের ইতিহাসের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, যার রাষ্ট্রপতি কার্যকালে আফগানিস্তান নানা রকম চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। তার নেতৃত্ব এবং সিদ্ধান্ত আজও আলোচনায় থাকে।