ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ-মধ্যভাগে অবস্থিত সেগুনবাগিচা একটি অভিজাত আবাসিক এলাকা। এটি রমনা, শাহবাগ, ধানমন্ডি, পল্টন ও মতিঝিলের মধ্যবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে অবস্থিত, যা এলাকাটিকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে রূপ দিয়েছে। উচ্চ-মধ্যবিত্ত ও ধনী শ্রেণীর বাসিন্দাদের আধিক্যের ফলে এখানে উঁচু উঁচু আবাসিক ভবন, সরকারি ও কর্পোরেট ভবন অসংখ্য।
সেগুনবাগিচা নামকরণের ইতিহাসে লুকিয়ে আছে সেগুন গাছের এক বিশাল বাগানের কথা। ‘সেগুন’ শব্দটি টেকটোনা গ্র্যান্ডিস গাছকে বোঝায়, আর ‘বাগিচা’ মানে বাগান। তাই, সেগুনবাগিচা আক্ষরিক অর্থে হল ‘সেগুন গাছের বাগান’। যদিও সেই ঐতিহাসিক বাগান এখন আর নেই, তবুও নামটি এখনও এই এলাকার পরিচয় বহন করে।
এই এলাকায় অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা মহাপরিচালকের কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মৎস্য অধিদপ্তরের ভবন, বাংলাদেশ সচিবালয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, গণপূর্ত বিভাগ, বাংলাদেশ স্থাপত্য বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেশ কিছু কর অঞ্চল। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী দেশের অন্যতম বৃহৎ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
সেগুনবাগিচার কৌশলগত অবস্থান এটিকে ঢাকার এক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা করে তুলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান (রমনা রেসকোর্স), আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের নিকটবর্তী অবস্থান এলাকার জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তোপখানা রোড, মাওলানা ভাসানী রোড, সেগুনবাগিচা রোড ও জাতীয় ঈদগাহ রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এলাকাটিকে ঢাকার অন্যান্য এলাকার সাথে যুক্ত করেছে। বাংলাদেশ সচিবালয় মেট্রো রেল স্টেশনও সেগুনবাগিচাতে অবস্থিত। বাংলা নববর্ষের সময় এখানে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন হয়, যা ঢাকাবাসীর কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।