সাজেক ভ্যালি: মেঘের রাজ্যের আবেদন
বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হলো রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই উপত্যকা তার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। চারপাশে পাহাড়ের সারি আর তুলোর মতো মেঘের ভেলা, সকালের সূর্যোদয়, বিকেলের সূর্যাস্ত, রাতের নক্ষত্রের আলো - সব মিলিয়ে সাজেক এক অপরূপ স্বপ্নলোকের সৃষ্টি।
ভৌগোলিক অবস্থান:
সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেক যাতায়াত সহজতর। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার এবং দীঘিনালা থেকে ৪০ কিলোমিটার।
দর্শনীয় স্থান:
- কংলাক পাহাড়: সাজেক ভ্রমণে আসা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। কংলাক পাড়া লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত। এখান থেকে ভারতের লুসাই পাহাড়ও দেখা যায়।
- রুইলুই পাড়া: সাজেকের শান্ত ও মনোরম গ্রাম।
- কমলক ঝর্ণা: রুইলুই পাড়া থেকে ট্রেকিং করে পৌঁছানো যায়। পিদাম তৈসা বা সিকাম তৈসা নামেও পরিচিত।
- হ্যালিপ্যাড: সাজেকের সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগের আদর্শ স্থান।
- হাজাছড়া ঝর্ণা: সাজেক থেকে ফেরার পথে অবস্থিত।
- দীঘিনালা ঝুলন্ত সেতু ও দীঘিনালা বনবিহার: সাজেক যাওয়ার পথে অবস্থিত।
যোগাযোগ:
- ঢাকা থেকে: হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, সেন্টমার্টিন, ইত্যাদি বাসে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। শান্তি পরিবহন সরাসরি দীঘিনালা যায়।
- খাগড়াছড়ি/দীঘিনালা থেকে: জীপ, সিএনজি, কিংবা মোটরসাইকেল রিজার্ভ করে সাজেক যাওয়া যায়। দীঘিনালা থেকে সেনাবাহিনীর এসকোর্টে যেতে হয়।
- চট্টগ্রাম থেকে: বিআরটিসি এবং শান্তি পরিবহন বাসে খাগড়াছড়ি/দীঘিনালা যাওয়া যায়।
- রাঙ্গামাটি থেকে: নৌপথ ও সড়কপথে বাঘাইছড়ি যাওয়া যায়, সেখান থেকে জীপ/মোটরসাইকেলে সাজেক।
থাকার ব্যবস্থা:
সাজেকে প্রায় শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ আছে। ভাড়া ১৫০০ টাকা থেকে ১৫০০০ টাকা পর্যন্ত। আদিবাসী কটেজেও থাকা যায়। ছুটির দিনে আগে থেকে বুকিং করা উচিত।
খাবার:
সকল রিসোর্টে খাবারের ব্যবস্থা আছে। প্রতিবেলা প্রতিজন ১০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। স্থানীয় ফলমূলও উপভোগ করা যায়।
ভ্রমণের উপযুক্ত সময়:
জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে মেঘের খেলা বেশি দেখা যায়।
আরও তথ্য:
প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপে যোগাযোগ করুন।