বাংলাদেশে প্রতিবছর অসংখ্য শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, যা একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা। ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী, ১ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৪,৪৩৮ জন শিশু পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছে। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে কারণ অনেক ঘটনায় রিপোর্ট করা হয় না। শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো অযত্ন অবস্থায় রাখা, তত্ত্বাবধানের অভাব, পানির আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব এবং সাঁতার জানার অভাব। গ্রামাঞ্চলে পুকুর, ডোবা, নদী, খাল ইত্যাদি পানি উৎস ঘরের কাছে থাকায় ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে শিশু একা খেলতে গিয়ে বা অন্য শিশুর সাথে খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এছাড়াও বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) পানিতে ডুবে মৃত্যু হার কমানোর জন্য বিভিন্ন প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে আছে প্রাক-স্কুল বয়সী শিশুদের পানি থেকে নিরাপদ রাখা, পানির আশেপাশে বেষ্টনী প্রদান, সাঁতার শেখানো, পানি সংক্রান্ত দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা, পানি থেকে উদ্ধার ও সিপিআর প্রশিক্ষণ এবং জলযানে নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থা।
এই সমস্যা সমাধানে সরকার, এনজিও, স্থানীয় সম্প্রদায় এবং প্রতিটি পরিবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা, সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং দুর্ঘটনার সময় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।