প্রতিরোধ

প্রতিরোধ: একটি বহুমুখী ধারণা

প্রতিরোধ শব্দটির অর্থ সাধারণত কোনো শক্তি বা প্রভাবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। তবে, এর ব্যবহার ও অর্থ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভিন্ন হতে পারে। এই নিবন্ধে আমরা সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করব।

  • *সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ:**

বিশ্বায়নের যুগে উন্নত দেশগুলোর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব খাদ্য, পোশাক, সংগীত, চলচ্চিত্র সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, দেশীয় সংস্কৃতিকে হুমকির মুখে ফেলে। এই প্রভাবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টাই হলো সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ। এই প্রতিরোধ বিভিন্ন রূপ নিতে পারে – ঐতিহ্যবাহী কলা, সংস্কৃতির সুরক্ষা, দেশীয় ভাষা ও ঐতিহ্যের প্রচার ইত্যাদি। একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো ব্রিটিশ শাসনের সময়কার নীল বিদ্রোহ। ১৮৫৯-১৮৬২ সালে যশোর ও নদীয়া জেলায় নীল চাষীরা নীল উৎপাদকদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই আন্দোলনে রায়তদের একতা ও সাহস দেশীয় সংস্কৃতির প্রতিরোধের একটি মহৎ উদাহরণ।

  • *মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ:**

অর্থনৈতিক অপরাধের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধরণ হলো মানি লন্ডারিং। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের উৎস গোপন করে আইনসম্মতভাবে ব্যবহারের প্রক্রিয়া হলো মানি লন্ডারিং। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদ এর দুটি মূল কারণ। বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন’ পাস হয়। এই আইন দেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুর্নীতি দমন কমিশনকে এই আইনের তদন্ত ও বিচারের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।

উপসংহার:

প্রতিরোধ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বা জাতীয় স্তরে সীমাবদ্ধ নয়, আন্তর্জাতিক স্তরে ও এর গুরুত্ব অপরিসীম। সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ দুটিই সুস্থ এবং সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

মূল তথ্যাবলী:

  • নীল বিদ্রোহ (১৮৫৯-১৮৬২): ব্রিটিশ শাসনের সময় নীল চাষীদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
  • মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯: দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে এই আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ: বিশ্বায়নের প্রভাবের বিরুদ্ধে দেশীয় সংস্কৃতির রক্ষা এবং প্রচার।