৩২ বছর পর মুক্তি পেলেন ‘জল্লাদ শাহজাহান’
৩২ বছর কারাভোগের পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ‘জল্লাদ শাহজাহান’ নামে পরিচিত শাহজাহান ভুঁইয়া। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক, ২৬ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করেছেন বলে জানা যায়। ১৮ই জুন, ২০২৩ রোববার দুপুর ১১টা ৪৬ মিনিটে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
শাহজাহান ভুঁইয়া ১৯৫০ সালের ২৬শে মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯১ সালে নানা অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার হন এবং প্রথমে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। মানিকগঞ্জে দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তিনি মোট ৪২ বছরের সাজা পান (অস্ত্র মামলায় ১২ বছর এবং ডাকাতি ও হত্যা মামলায় ৩০ বছর)। তবে কারাগারে সুশৃঙ্খল জীবনযাপন এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার কারণে তিনি ১০ বছর ৫ মাস ২৮ দিনের মতো সাজা মওকুফ পান। অর্থাৎ তিনি ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন কারাভোগ করেছেন।
তার ফাঁসি কার্যকরের তালিকায় রয়েছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ছয় আসামী (বজলুল হুদা, মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মহিউদ্দিন আহমেদ, আবদুল মাজেদ), যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় জন (আব্দুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী) এবং আরও অনেক আলোচিত ব্যক্তি, যেমন এরশাদ শিকদার, বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসান।
মুক্তির পর শাহজাহান ভুঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, তিনি গৃহহীন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সহায়তা ও বসবাসের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান। তিনি ফাঁসি কার্যকরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, প্রতিটি ফাঁসিতে একটা আবেগ থাকে, কারণ মানুষ যতোই অপরাধী হোক না কেন, মৃত্যুর সম্মুখীন হলে সবার একটু না একটু মায়া লাগে।
শাহজাহান ভুঁইয়ার জীবনী ও কারা জীবনের ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাস ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
জল্লাদ শাহজাহান: ২৬টি ফাঁসি, ৩২ বছরের কারা জীবন ও মুক্তির পরের আবেদন
৩২ বছর কারাভোগের পর ‘জল্লাদ শাহজাহান’ নামে পরিচিত শাহজাহান ভুঁইয়া মুক্তি পেয়েছেন। তিনি ২৬ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর ফাঁসি কার্যকর করেছেন, যার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আসামী ও যুদ্ধাপরাধীরাও রয়েছেন। মুক্তির পর তিনি আর্থিক সাহায্য ও বসবাসের ব্যবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। তার জীবনী বাংলাদেশের আইন প্রয়োগের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।