শহীদ শামসুজ্জামান: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক অমর নায়ক
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব ও সাহসের জন্য ‘বীর উত্তম’ খেতাবপ্রাপ্ত শহীদ শামসুজ্জামানের জন্ম ও মৃত্যুর সঠিক তারিখ অজানা হলেও, তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার সোনার চর গ্রামে জন্ম নেওয়া শামসুজ্জামান মো. দৌলত হোসেন ও আয়েতুন নেছার পুত্র ছিলেন। পরিবারে তিনি দুই ভাই এবং তিন বোনের মধ্যে একজন ছিলেন। বর্তমানে তার একমাত্র বোন মমতাজ বেগম জীবিত আছেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে শামসুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় মুক্তিবাহিনীতে যোগদানের জন্য ভারতে যান। সেখানে ২৮ দিনের কঠোর প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাকে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জেড ফোর্সের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৭১ সালের ৪ আগস্ট, শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ১১ নম্বর সেক্টরের নকশী বিওপিতে অবস্থানরত অবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ২৪-২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে গঠিত একটি ছোটো দলে শামসুজ্জামান ছিলেন।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটিতে আক্রমণের সময় ভয়াবহ গোলাগুলির মধ্যে শামসুজ্জামান বিওপির ৫০ গজের মধ্যে পৌঁছানোর সময় একটি ভূমিমাইনে শহীদ হন। তার বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ ও আত্মত্যাগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ সরকার তার অসাধারণ বীরত্বের জন্য তাকে ‘বীর উত্তম’ খেতাব প্রদান করেছে। শামসুজ্জামানের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ফলেই আমরা আজ স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করতে পারছি। তাদের স্মৃতি আমাদের কাছে চিরদিন অমূল্য।