ইউরোপের মুসলিম সম্প্রদায় এবং তাদের চ্যালেঞ্জ: শাদা ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
ইউরোপে বসবাসরত প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মুসলিমের জীবনে বিরাজমান চ্যালেঞ্জ ও বৈষম্যের বর্ণনা দিয়েছেন গবেষণাধর্মী সংস্থা নিউ হরাইজন প্রজেক্টের পরিচালক শাদা ইসলাম। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি ইউরোপীয় মুসলিমদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।
শাদা ইসলামের লেখা অনুযায়ী, ইউরোপে মুসলিমদের প্রতি প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা হলো: তারা চরমপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ে, ধর্মীয় রীতিনীতির প্রতি অতিমাত্রায় অনুগত, আলাদা সমাজে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করে এবং নারীদের প্রতি পুরুষতান্ত্রিক নিপীড়ন করে। এছাড়াও, ইউরোপের দেশগুলো মুসলিমদের মদ পান, শূকরের মাংস খাওয়া এবং ইউরোপীয় সংস্কৃতি গ্রহণ করার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু শাদা ইসলামের মতে, এসব চাপ মুসলিমদের নিজেদের পরিচয় এবং বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের পর ইউরোপে মুসলিমদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে ইসরায়েলি ফুটবল দলের সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনার পর, মুসলিমদের মরক্কো বংশোদ্ভূত বলে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। মুসলিমবিদ্বেষী এমপি গার্ট উইল্ডার্স এমনকি মরক্কোতে তাদের ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।
শাদা ইসলাম উল্লেখ করেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছেন ইউরোপীয় সমাজে মুসলিমদের এখনও গ্রহণ করা হয় না। ভাষায় দক্ষতা, উচ্চশিক্ষা অর্জন বা সঠিক পোশাক পরা সত্ত্বেও কিছু সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ মুসলিমদের সংস্কৃতির সাথে মিল না থাকার অভিযোগ তোলে।
তবে শাদা ইসলাম আশা প্রকাশ করেছেন যে, একদিন ইউরোপীয়রা ভিন্নতাকে মেনে নেবে। এ ক্ষেত্রে মুসলিমদের বেশি করে আওয়াজ তুলতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি ইউরোপীয় ইহুদিদের সাথে একসময় যে আচরণ হতো, সেটা উল্লেখ করে মুসলিমদের জন্যও পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন।