রৌমারী: কুড়িগ্রাম জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। ১৯৭.০৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলা ২৫°২৭´ থেকে ২৫°৪৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৫´ থেকে ৮৯°৫৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। উত্তরে উলিপুর উপজেলা ও ভারতের আসাম রাজ্য, দক্ষিণে চর রাজীবপুর উপজেলা, পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য এবং পশ্চিমে চর রাজীবপুর, চিলমারী ও উলিপুর উপজেলা রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, রৌমারীর জনসংখ্যা ১৯৬৪১৭; পুরুষ ৯৫৭৮৩ এবং মহিলা ১০০৬৩৪। মুসলিম ১৯৪৯১৪, হিন্দু ১৪৯৯, খ্রিস্টান ৪। ব্রহ্মপুত্র নদী এই উপজেলার প্রধান জলাশয়।
১৯০৮ সালে রৌমারী থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালের ১ আগস্ট থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। রৌমারীর ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের সময় বড়াইবাড়িতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও মানকাচরের আবদুল কাশেম মিয়ার নেতৃত্বে পাকিস্তান কেল্লা প্রতিষ্ঠা। মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমান, কর্নেল তাহের, উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান সহ অনেকে এখান থেকে ১১ নং সেক্টরে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করেন।
শিক্ষার দিক থেকে, উপজেলায় ৮ টি কলেজ, ২৫ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৩৭ টি মাদ্রাসা রয়েছে। রৌমারী ডিগ্রি কলেজ, রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজ, যাদুর চর মডেল কলেজ উল্লেখযোগ্য। কৃষি এই উপজেলার অর্থনীতির মূল ভিত্তি। ধান, পাট, গম, আখ, ভুট্টা ইত্যাদি প্রধান ফসল। রৌমারী হাট, দাঁতভাঙ্গা হাট, আমবাড়ি হাট উল্লেখযোগ্য। চাঁন্দমারী পর্যটন কেন্দ্র একটি দর্শনীয় স্থান। এছাড়াও, ব্র্যাক, কেয়ার, আরএসডিএ, আরএসডিপি সহ বিভিন্ন এনজিও এখানে কাজ করে। আর্সেনিক দূষিত পানির সমস্যা এখানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।