ডা. রুমি আহমেদ খান: একজন বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
ডা. রুমি আহমেদ খান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো রিজিওনাল মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক। তিনি রেসপিরেটরি ও আইসিইউ বিভাগে মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এবং ট্রেনিং প্রোগ্রামের পরিচালক। ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তিনি কোভিড-১৯ মহামারীর সময় প্রথম আলোর সাথে একটি সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যেখানে তিনি মহামারী মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেন।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি:
ডা. রুমি আহমেদ খান কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ, পরীক্ষার নির্ভুলতা, এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, পিসিআর পরীক্ষার নির্ভুলতা ৬০-৭০%। কোনো রোগীর ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল সাসপিশন থাকলে নেগেটিভ টেস্টের উপর খুব বেশি গুরুত্ব না দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করার এবং বেসরকারি খাতের ল্যাবগুলিকে সহায়তা করার আহ্বান জানান। তিনি হাসপাতালগুলোতে নেগেটিভ প্রেশার ফ্লোর ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ করেন।
চিকিৎসা ব্যবস্থার অভাব:
সাক্ষাত্কারে ডা. রুমি বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা তুলে ধরেন। তিনি আইসিইউ শয্যা, ভেন্টিলেটর এবং পিপিই-এর অভাবের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন যে, দেশে পর্যাপ্ত পিপিই ও মাস্ক থাকার দাবী সত্ত্বেও বাস্তবতা ভিন্ন। তিনি পিপিই ব্যবহারের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ও উন্নত দেশের মডেল অনুসরণের পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ:
ডা. রুমি বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য কিছু অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছে একজন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন, জনগণকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা, ওষুধ কোম্পানির সাথে যোগাযোগ, পিপিই উৎপাদন, অক্সিজেন সরবরাহ এবং নিউমোনিয়া রোগীদের উপর বেশি নজর রাখা।
অন্যান্য তথ্য:
উল্লেখ্য, ডা. রুমি আহমেদ খানের সাথে সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন মিজানুর রহমান খান। সাক্ষাৎকারে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার গবেষণা ও মডেলের উল্লেখ করেন। তিনি ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর সাথে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করেন এবং আগামী জুনের মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন।