রায়হান আহমদ

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

সিলেটে পুলিশি নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ: একটি বেদনার কাহিনী

২০২০ সালের ১১ই অক্টোবর ভোররাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার থানায় পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রায়হান আহমদ (৩২)। এই ঘটনায় সিলেটবাসী তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রায়হানের স্ত্রী হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা দায়ের করেন, যেখানে পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ দাবি করেছিল যে রায়হান কাস্টঘর এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় গণপিটুনিতে মারা গেছেন। কিন্তু রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, বন্দরবাজার থানায় পুলিশি নির্যাতনের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয় যে, রায়হানের হাত-পা আঘাত করা হয়েছিল, নখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল এবং রাতভর নির্যাতনের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে।

রায়হানের সৎ বাবা জানান, ফাঁড়িতে যাওয়ার পর একজন পুলিশ সদস্য তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেছিল। পরে রায়হানের অসুস্থতার কথা জানানো হয়। মোবাইল ফোনে রায়হান নিজেই তার মা কাছে টাকা নিয়ে ফাঁড়িতে আসার আবেদন করেছিলেন।

তদন্তে জানা যায়, থানার সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পরিবর্তন করা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। রায়হানের মা অভিযোগ করেন, পুলিশ তার ছেলের কাপড় পরিবর্তন করে এবং মোবাইল ফোনও ফেরত দেয়নি।

এই ঘটনার পর, বন্দরবাজার থানার ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয় এবং আকবর পলাতক ছিল। পরে তাকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হয়। রায়হানের স্ত্রী দায়ের করা মামলা পিবিআই তদন্ত করে এবং অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলার বিচার কার্যক্রম এখনো চলছে।

এই ঘটনা চার বছর পার হলেও বিচার কার্যক্রমে বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আসামিপক্ষ একাধিক সাক্ষীদের পুনরায় জেরার আবেদন করছে যার ফলে বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম তার ছেলের খুনীদের বিচারের দাবিতে পথ চেয়ে আছেন।

সিলেটে পুলিশি নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, বিচারের দীর্ঘ প্রতীক্ষা

মূল তথ্যাবলী:

  • ২০২০ সালের ১১ই অক্টোবর সিলেটে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যু।
  • পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের।
  • ময়নাতদন্তে দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
  • প্রধান আসামি এসআই আকবর হোসেন ভারতে পালিয়ে যায় পরে গ্রেফতার হয়।
  • মামলার বিচার কার্যক্রমে বিলম্বের অভিযোগ।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।