রফিক হারিরি

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৮:৩৪ এএম

রফিক হারিরি (১ নভেম্বর ১৯৪৪ - ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৫) লেবাননের একজন বিখ্যাত ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এবং ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি লেবাননের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর আমলে তিনি পাঁচটি ক্যাবিনেটের নেতৃত্ব দেন। তাইফ চুক্তি স্বাক্ষরের এবং বৈরুত পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি গৃহযুদ্ধোত্তর লেবাননের প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী ও ধনী রাজনীতিবিদদের একজন ছিলেন।

২০০৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বৈরুতে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় রফিক হারিরি নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য হিজবুল্লাহর চার সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং লেবাননের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার চলছে। তবে, অনেকের মতে, সিরিয়ার সরকারের সাথেও এই হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র রয়েছে।

হারিরির হত্যাকাণ্ড লেবাননে রাজনৈতিক পরিবর্তনের অনুঘটক হয়ে ওঠে। সিডার বিপ্লবের বিক্ষোভের ফলে লেবানন থেকে সিরিয়ার সেনা প্রত্যাহার এবং সরকার পরিবর্তন সম্ভব হয়।

হারিরি ১৯৪৪ সালের ১ নভেম্বর লেবাননের সিডন শহরে একটি মধ্যবিত্ত সুন্নি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর এক ভাই ও এক বোন ছিল। তিনি সিডনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং বৈরুত আরব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি সৌদি আরবে কাজ করতে যান এবং এক সময় শিক্ষকতা করার পর নির্মাণ শিল্পে যুক্ত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি লেবাননের পাশাপাশি সৌদি আরবের নাগরিকত্বও অর্জন করেন।

১৯৬৯ সালে তিনি সিকনস্ট নামে একটি ছোট উপকন্ট্র্যাক্টিং প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনি ফরাসি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওগারের সাথে যুক্ত হন এবং সৌদি আরবে একটি হোটেল নির্মাণের কাজে অংশ নেন। এই প্রকল্পের সাফল্যের ফলে তিনি সৌদি রাজপরিবারের নিকট প্রশংসিত হন এবং সৌদি ওগার নামক সংস্থা গঠন করে ওগারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, যা সৌদি রাজপরিবারের বৃহৎ নির্মাণ প্রকল্পগুলিতে যুক্ত ছিল। এই সাফল্যের ফলে তিনি একজন কোটিপতি ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

তিনি লেবাননে বেশ কয়েকটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প শুরু করেন, যার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ অন্যতম। ১৯৭৯ সালে তিনি ইসলামিক সমিতি ও সংস্কৃতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরে হারিরি ফাউন্ডেশনের নামে পরিচিত হয়। তিনি রাজনীতিতেও জড়িত হন এবং সৌদি রাজপরিবারের দূত হিসেবে জাতিসংঘে কাজ করেন।

তার মৃত্যুর পর বৈরুতের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামকরণ করা হয় রফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বৈরুত জেনারেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নামকরণ করা হয় রফিক হারিরি হাসপাতাল। তার পুত্র সাদ হারিরি ফিউচার পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • রফিক হারিরি লেবাননের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
  • তিনি লেবাননের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
  • আত্মঘাতী বোমা হামলায় তিনি নিহত হন।
  • তার হত্যাকাণ্ড লেবাননে রাজনৈতিক পরিবর্তনের অনুঘটক হয়।
  • হিজবুল্লাহর সদস্যদের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিযোগ আনা হয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।