লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক অমিত অবদান রাখা প্রধান
১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। তিনি ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার খারেরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবদুর রহমান এবং মাতার নাম আফজলা খাতুন। তিনি নয়াদিল্লির ইউনিয়ন একাডেমিতে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন এবং ১৯৪৭ সালে পাক-ভারত বিভাগের পর তার পরিবার রাওয়ালপিন্ডিতে চলে যায়। সেখানে তিনি গর্ডন কলেজে পড়াশোনা করেন।
১৩ মে ১৯৫৪ সালে তিনি ৯ম পিএমএ লং কোর্সে আর্টিলারি রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান থেকে ফিরে এসে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি এরশাদের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হওয়া দ্বিতীয় পাকিস্তানি ফেরত অফিসার ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি কর্নেল পদে ছিলেন এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের ব্রিগেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালে তিনি এরশাদের ক্ষমতা দখলকে সমর্থন করেন। তখন তিনি মেজর জেনারেল এবং বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রধান ছিলেন।
১৯৮৬ সালের ৩১ আগস্টে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সপ্তম সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান এবং ১৯৯০ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯০ সালে পূর্ণ সামরিক সম্মাননা সহ সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর তিনি জনচক্ষুর আড়ালে রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে ঢাকায় ৯২ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
জেনারেল মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী উন্নত প্রশিক্ষণ, কঠোর শৃঙ্খলা এবং উন্নত পেশাদারিত্বের দিকে এগিয়ে যায়। তিনি জাতিসংঘ শান্তিমিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণের পথ সুগম করেছিলেন। তিনি একজন প্রচারবিমুখ ব্যক্তি ছিলেন এবং তার সামরিক জীবনের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ একটি বই প্রকাশের ইচ্ছা ছিল, যা তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।