মোজাম্মেল হোসেন নাঈম: এক মেধাবী শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) তৃতীয় বর্ষের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৩)। শনিবার (২৩ নভেম্বর) বনভোজনে যাওয়ার পথে দ্বিতল বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনিসহ আরও দুই শিক্ষার্থী নিহত হন।
নাঈম ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ফেনী ফাজিলপুর সাউথ ইস্ট ডিগ্রি কলেজের হিসাববিজ্ঞানের অধ্যাপক মীর মোতাহের হোসেন শাহীনের ছেলে। ২০১৯ সালে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পড়ালেখায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তার বড় ভাই বাকপ্রতিবন্ধী। নাঈমের শখ ছিল ফটোগ্রাফি, স্বপ্ন ছিল দেশের সেরা প্রকৌশলী হওয়া। কিন্তু সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেল।
নাঈমের মৃত্যুর খবর শুনে শোকে মগ্ন হয়ে পড়েছেন তার পরিবার, প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবরা। তার বাবা মোতাহের হোসেন শাহীন বলেন, "আমার ছেলে অত্যন্ত নম্র-ভদ্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছিল। দেশবাসীর কাছে ছেলের জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ যেন আমার ছেলেকে শহীদি মর্যাদা দান করেন।"
নাঈমের চাচাতো বোন সুরভী বলেন, "আকস্মিক এমন ঘটনায় পুরো পরিবার শোকে স্তব্ধ। এত তাড়াতাড়ি ভাইকে হারাবো কখনো ভাবিনি। নাঈম খুবই নম্র-ভদ্র ও মেধাবী ছিল।"
নাঈমের প্রতিবেশী ফেনী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, "নাঈমকে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি, এত ভদ্র ও বিনয়ী ছিল যা বর্ণনাতীত।"
শনিবার রাত আড়াইটার দিকে নাঈমের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। রোববার সকাল ১০টার দিকে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে দাদা-দাদির কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। নাঈমের এমন অকাল মৃত্যুতে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন স্বজনরা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।