মো. হুমায়ুন কবির: একাধিক ব্যক্তি ও তাদের অবদান
এই নামটি দুজন ব্যক্তিকে নির্দেশ করে, যাদের জীবন ও কাজ পরস্পর সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই বিভ্রান্তি এড়াতে, আমরা তাদের পৃথকভাবে বর্ণনা করব:
- *১. হুমায়ুন কবির (কবি):**
২৫ ডিসেম্বর ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণকারী হুমায়ুন কবির ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বাংলা কবি। তিনি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার সাকরাইল গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৬৩ সালে ম্যাট্রিক এবং ১৯৬৫ সালে আই.এ. পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স এবং ১৯৬৯ সালে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমী থেকে গবেষণা বৃত্তি পান। জীবনানন্দ দাশের কবিতা এবং সাম্প্রতিক জীবন চৈতন্য তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল। তিনি বামপন্থী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন এবং ১৯৭১ সালে লেখক সংগ্রাম শিবিরের প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পরে ১৯৭২ সালে লেখক সংগ্রাম শিবিরের নাম পরিবর্তিত হয়ে বাংলাদেশ লেখক শিবির হয়। তিনি পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টিতে সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে, ৬ জুন ১৯৭২ সালে ঢাকার ইন্দিরা রোডে তাকে নিহত করা হয়। তার মৃত্যুর পর 'কুসুমিত ইস্পাত' এবং 'রক্তের ঋণ' নামে দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। 'হুমায়ুন কবির রচনাবলী'-তে তার আরও কিছু কবিতা, প্রবন্ধ ও গল্প সংকলিত আছে।
- *২. এম. হুমায়ুন কবির (কূটনীতিক):**
এম. হুমায়ুন কবির একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী কূটনীতিক। তিনি ১৯৫২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন প্রবীণ সৈনিক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, কলকাতায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রথম সচিব, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের সদস্য, এবং নেপাল ও অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন।