মাসুদুর রহমান

মাসুদুর রহমান: বাংলাদেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা

মেজর জেনারেল (অব.) মাসুদুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন অসাধারণ বীর। ৩১ মে, ১৯৪৭ সালে ভোলা জেলার সদর উপজেলার উকিলপাড়ায় জন্মগ্রহণকারী এই মুক্তিযোদ্ধা তার সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। তার পৈতৃক বাড়ি ভোলা জেলায় অবস্থিত এবং তার বাবার নাম আবদুল ওয়াজেদ এবং মায়ের নাম আনোয়ারা বেগম। তার নানা সৈয়দ মিয়া দৌলতখান উপজেলার কালু মৃর্ধা বাড়িতে বসবাস করতেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মাসুদুর রহমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ৩০শে মার্চ কালুরঘাটের যুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত হন। বুড়িঘাট ও মহালছড়ির যুদ্ধে অংশ নেওয়ার পর ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি মুক্তিবাহিনীর ৬ নম্বর সেক্টরের ভজনপুর সাব-সেক্টরের একটি দলের নেতৃত্ব দেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করে মেজর জেনারেল পদে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংগঠন ‘মুক্ত আসর’-এর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মাসুদুর রহমানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল অমরখানা আক্রমণ। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তানিদের অমরখানার শক্তিশালী ঘাঁটির উপর অভিযান চালিয়ে তিনি মিত্রবাহিনীর ৭ মারাঠা রেজিমেন্টের সহযোগিতায় বিজয় অর্জন করেন। অমরখানা পঞ্চগড় জেলায় অবস্থিত ছিল, যার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা এবং পূর্বে তালমা নদী অবস্থিত। এই সাহসিক ও কৌশলী অভিযানের জন্য তিনি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এছাড়াও জগদলহাট, ময়দানদীঘি, বক্সিগঞ্জ, বোদা সহ অন্যান্য যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। মাসুদুর রহমানের জীবন ও কাজ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্থায়ী স্থান করে নিয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • মাসুদুর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
  • তিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাবপ্রাপ্ত।
  • অমরখানা আক্রমণে তার অসাধারণ ভূমিকা ছিল।
  • তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেজর জেনারেল পদে অবসর গ্রহণ করেন।
  • বর্তমানে তিনি ‘মুক্ত আসর’-এর উপদেষ্টা।