মসজিদের ইমাম হলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি মসজিদে নামাজের ইমামতি করেন এবং মুসলিম সমাজের ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়গুলিতে নেতৃত্ব প্রদান করেন। ইসলাম ধর্মে ইমামের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মুসল্লিদের নামাজে নেতৃত্ব দান করেন, ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করেন, এবং সমাজের কল্যাণে কাজ করেন।
ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে ইমামের ভূমিকার ব্যাপকতা ও গুরুত্ব ছিল। প্রাথমিক ইসলামী সমাজে ইমাম ছিলেন কেবল নামাজের নেতা নয়, বরং ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ইসলামের প্রথম ইমাম ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারপর খোলাফায়ে রাশেদীন ইমামতীর গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। শিয়া মুসলমানদের মতে, আলী (রাঃ) এবং তার বংশধরদের বারোজন ইমাম ছিলেন এবং তাদেরকে শিয়া সম্প্রদায়ের মূল স্তম্ভ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বর্তমান সময়েও ইমামের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মসজিদে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত ব্যক্তি ধর্মীয় শিক্ষা, জুম্মার খুৎবা, ও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজে নেতৃত্ব প্রদান করেন। তিনি সকলের জন্য সমানভাবে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে থাকেন। তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার, ঐক্য, ও সহযোগিতার বার্তা ছড়িয়ে দেন। অনেক ইমাম স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সরাসরি জড়িত থাকেন, তাদের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করেন এবং সামাজিক কল্যাণে অবদান রাখেন।
তবে মসজিদের ইমামের সংজ্ঞা কখনো কখনো অস্পষ্ট হতে পারে। কারণ, একজন ব্যক্তি মসজিদে নামাজের ইমামতি করতে পারেন, কিন্তু তিনি সমাজে ধর্মীয় নেতৃত্বের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন নাও করতে পারেন। আবার, অনেক ধর্মীয় পণ্ডিত ও আলেমকেও ইমাম হিসেবে সম্বোধন করা হয় যারা মসজিদে নিয়মিতভাবে নামাজের ইমামতি করেন না। সুতরাং, 'মসজিদের ইমাম' শব্দটির অর্থ প্রেক্ষাপেক্ষ অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।