মতলব দক্ষিণ: চাঁদপুরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
মতলব দক্ষিণ চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। এটি ২০০০ সালের ৩০ এপ্রিল পূর্ববর্তী মতলব থানা থেকে পৃথক হয়ে একটি স্বাধীন প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে গঠিত হয়। ১২৯.৩২ বর্গ কিমি আয়তনের এই উপজেলার উত্তরে মতলব উত্তর ও দাউদকান্দি উপজেলা, দক্ষিণে চাঁদপুর সদর ও হাজীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে কচুয়া উপজেলা এবং পশ্চিমে মতলব উত্তর উপজেলা অবস্থিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, মতলব দক্ষিণের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২১০,০৫০, যার মধ্যে পুরুষ ৯৭,৭২৮ এবং মহিলা ১১২,৩২২। ধর্মীয়ভাবে, এখানে ১৮৮,৯৮০ মুসলিম, ২০,৯৭৩ হিন্দু, ৪০ খ্রিস্টান এবং ৫৫ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বাস করেন।
ঐতিহাসিক দিক থেকে, মতলব দক্ষিণের মুন্সেফদির নীলকুঠি, লাকশিবপুরের ডুবন্ত ডিঙ্গী এবং কাশিমপুরের বারদুয়ারা উল্লেখযোগ্য প্রাচীন নিদর্শন। মুক্তিযুদ্ধের সময়, এ উপজেলায় লালার হাটখোলা, বরদিয়া আড়ং বাজার এবং নাগদার যুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। লালার হাটখোলা যুদ্ধে ২৬ জন পাকসেনা নিহত হয়েছিল।
অর্থনৈতিক দিক দিয়ে, কৃষি মতলব দক্ষিণের প্রধান আয়ের উৎস। ধান, গম, আলু, পাট, আখ, সরিষা এবং তিল এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, নারিকেল, পেঁপে, জামরুল, আমড়া এবং কামরাঙ্গা প্রধান ফল-ফলাদি। মৎস্য, গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগি পালনও এখানে অন্যতম আয়ের উৎস। উপজেলার ৮৭ কিমি পাকা রাস্তা, ১৪ কিমি আধা-পাকা রাস্তা এবং ১৯২ কিমি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। নৌপথের দৈর্ঘ্য ১০ কিমি। মতলব বাজার, নারায়ণপুর হাট, এবং আড়ংবাজার এখানকার উল্লেখযোগ্য হাটবাজার। আলু, পাট এবং মাছ মতলব দক্ষিণের প্রধান রপ্তানিদ্রব্য।
শিক্ষার দিক থেকে, এখানে ৪টি কলেজ, ২৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৬টি মাদ্রাসা রয়েছে। মতলব ডিগ্রি কলেজ এবং বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এই উপজেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১টি হাসপাতাল, ১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ৭টি ক্লিনিক। ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা এবং নিজেরা করি এখানে কাজ করে।
অতিরিক্ত তথ্য পাওয়া গেলে, আমরা এই নিবন্ধটি আরও সমৃদ্ধ করব।