ভূঞাপুর উপজেলা

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম
নামান্তরে:
ভুয়াপুর উপজেলা
ভুঞাপুর উপজেলা
ভূঞাপুর উপজেলা

টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী ভূঞাপুর উপজেলা: একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ

বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ভূঞাপুর উপজেলা ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। ২৪°২৭′৩০″ উত্তর ৮৯°৫২′০০″ পূর্ব অক্ষাংশে অবস্থিত এই উপজেলার আয়তন প্রায় ১৩৪.৪৬ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে গোপালপুর ও জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা, দক্ষিণে কালিহাতী, পূর্বে গোপালপুর ও ঘাটাইল এবং পশ্চিমে যমুনা নদী ও সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলা ভূঞাপুরকে ঘিরে রেখেছে।

ঐতিহাসিক পটভূমি: বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার অংশ হিসেবে এককালে ভূঞাপুরের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। ১৮৬৬ সালের পূর্বে এটি সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার সাথে যুক্ত ছিল। ১৮৬৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ ময়মনসিংহ থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও, ভূঞাপুরের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ১৯৭৪ সালের ৭ আগস্ট গোপালপুর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বতন্ত্র থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ সালের ২৪শে মার্চ এটি উপজেলা হিসেবে ঘোষিত হয় এবং ১৯৯৪ সালের ২০শে মার্চ ভূঞাপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়।

জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী: ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে ভূঞাপুর উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ১,৮৯,৯১৩। জনসংখ্যার অধিকাংশই মুসলমান, যদিও হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীও এখানে বসবাস করেন।

অর্থনীতি: কৃষি ভূঞাপুরের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। ধান, পাট, সরিষা, গম, আলু প্রভৃতি ফসল এখানে উৎপাদিত হয়। এছাড়াও, মৎস্য চাষ, গবাদিপশু পালন ও কুটির শিল্পও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য: ভূঞাপুরে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইব্রাহিম খাঁ কলেজ, শমসের ফকির কলেজ এবং বিভিন্ন মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্বাস্থ্য সেবার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেশ কিছু স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভূঞাপুর উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ, হত্যাযজ্ঞ এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করে ভূঞাপুরের বিভিন্ন গণকবর ও স্মৃতি স্থাপনা।

উল্লেখযোগ্য স্থান: ভূঞাপুরের কিছু উল্লেখযোগ্য স্থানের মধ্যে রয়েছে যমুনা নদী, ভূঞাপুর বিল, বিভিন্ন ঐতিহাসিক মসজিদ ও মন্দির, এবং বঙ্গবন্ধু সেতু।

ভূঞাপুর উপজেলা তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। ভবিষ্যতে এই উপজেলার অগ্রগতির জন্য উন্নত পরিকাঠামো এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় আরও বেশি জোর দেওয়া প্রয়োজন।

মূল তথ্যাবলী:

  • টাঙ্গাইল জেলার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত
  • আয়তন প্রায় ১৩৪.৪৬ বর্গ কিলোমিটার
  • ১৯৮৩ সালে উপজেলা হিসেবে ঘোষিত
  • কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি
  • মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।