জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কোটা: বিতর্ক ও বাস্তবতা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) স্নাতক ভর্তি প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন। বিশেষ করে, নির্ধারিত আসনের বাইরে বিভিন্ন কোটা নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনা অব্যাহত। এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে 'ভিসি কোটা' এবং 'পোষ্য কোটা'।
ভিসি কোটা: এটি উপাচার্য কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত একটি কোটা, যেখানে উপাচার্য নিজের বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ প্রদান করেন। এই কোটার অস্তিত্ব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে, কারণ এটি অন্যান্য কোটার তুলনায় অধিক স্বেচ্ছাচারী এবং মেধার পরিবর্তে অন্যান্য বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। জাবির রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ভিসি কোটায় ২০টি আসন বরাদ্দ থাকে। ২০২৪ সালের শেষের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই কোটা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পোষ্য কোটা: এই কোটার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তান-সন্ততি ভর্তির সুযোগ পান। এই কোটার সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়; তবে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ৫৬ জন এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৫৪ জন পোষ্য কোটার মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এই কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে। ২০২৪ সালের শেষের দিকে প্রশাসন পোষ্য কোটার সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়, একটি বিভাগে সর্বোচ্চ চারজন শিক্ষার্থী ভর্তি এবং ন্যূনতম ৩৫% নম্বর অর্জনের শর্ত আরোপ করে।
অন্যান্য কোটা: জাবি'তে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, দলিত ও আদিবাসী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা, খেলোয়াড় কোটা ইত্যাদি বিভিন্ন কোটা রয়েছে যার সংখ্যা নির্ধারিত এবং প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
বিতর্কের মূল: মেধা তালিকায় উচ্চ স্থান অর্জনকারী অনেক শিক্ষার্থী তাদের পছন্দের বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায় না, অথচ কোটাধারী শিক্ষার্থীরা মেধা তালিকায় স্থান না পেয়েও পছন্দমত বিভাগে ভর্তি হতে পারেন। এই বৈষম্য ও সুযোগ-অসুযোগের ব্যাপারটি বিতর্কের মূল কারণ।
প্রশাসনের পদক্ষেপ: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা সংস্কারের পাশাপাশি ভিসি কোটা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০২৪ সালের শেষের দিকে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষা ১০টি ইউনিটের পরিবর্তে ৭টি ইউনিটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি: শিক্ষার্থীরা ভিসি কোটা বাতিল, পোষ্য কোটার সংস্কার, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ এবং আবেদন ফি কমানোর দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কোটা নিয়ে চলমান বিতর্ক শিক্ষাব্যবস্থায় মেধা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
Key Information List": ["জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি কোটা ও পোষ্য কোটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলে আসছে।", "উপাচার্য কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ভিসি কোটায় মেধার চেয়ে অন্যান্য বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।", "পোষ্য কোটায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তানদের ভর্তির সুবিধা রয়েছে।", "শিক্ষার্থীরা ভিসি কোটা বাতিল ও পোষ্য কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে।", "২০২৪ সালের শেষের দিকে প্রশাসন ভিসি কোটা বাতিল ও পোষ্য কোটা সংস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।"] ,