বেড়া পৌরসভা: পাবনা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভা
বেড়া পৌরসভা রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। এর উত্তরে শাহজাদপুর উপজেলা, পশ্চিমে সাঁথিয়া উপজেলা এবং পূর্ব ও দক্ষিণে বেড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন অবস্থিত। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, পৌরসভার জনসংখ্যা ছিল ৪৩,৬৭৭ জন। বর্তমান মেয়র হলেন অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
জনশ্রুতি অনুযায়ী, ‘বেড়া’ নামটি আরবি ‘বেড়ুহা’ শব্দ থেকে এসেছে। এর পূর্বনাম ছিল শম্ভুপুর। নদী-নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত হওয়ার কারণে এটি প্রাচীনকাল থেকেই বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ৮০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে আরব বণিকরা এখানে তাদের বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে। সুলতানি আমলে আরব দেশে দুর্ভিক্ষের সময় বেড়া বন্দরের মাধ্যমে খাদ্যশস্য পাঠানো হতো। ইংরেজ শাসনামলে ১৮২৮ সালে যমুনার পশ্চিম উপকূলে মথুরা থানা পুনঃস্থাপিত হয়। ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল বেড়া থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধেও বেড়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
শিক্ষা ও অর্থনীতি:
বেড়া পৌরসভায় ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বেড়া বিপিন বিহারি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়াও, এখানে অন্যান্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ এবং মাদ্রাসা রয়েছে। ২০০১ সালের শিক্ষা জরিপ অনুযায়ী, শিক্ষার হার ছিল ৪১.২০%। অর্থনীতিতে কৃষি, শিল্প (তাঁতশিল্প, ইটভাটা, আটামিল, ধান মিল), এবং ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উন্নয়ন প্রকল্প:
বেড়া পৌরসভায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু এমপি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে বেড়া ডায়াবেটিক সমিতির নবনির্মিত ভবন, হুরাসাগর নদীর উপর প্রস্তাবিত ব্রিজ এবং পোর্ট চত্বরে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল শিশু পার্ক উল্লেখযোগ্য।
সারসংক্ষেপে, বেড়া পৌরসভা একটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।