বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি): ইতিহাস, বিদ্রোহ ও পুনর্গঠন
১৭৯৫ সালে ‘রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন’ নামে প্রতিষ্ঠিত বাহিনীটি বর্তমানে বাংলাদেশের আধা-সামরিক বাহিনী ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি) নামে পরিচিত। এর দীর্ঘ ইতিহাস জুড়ে নাম পরিবর্তন, কাঠামোগত পরিবর্তন ও একটি ভয়াবহ বিদ্রোহের ঘটনা অন্তর্ভুক্ত। মূলত বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষাই এর প্রধান দায়িত্ব।
প্রাথমিক ইতিহাস:
- ১৭৯৫: রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা।
- ১৮৬১: ফ্রন্টিয়ার গার্ডস নামকরণ।
- ১৮৭৯: পিলখানায় প্রথম ঘাঁটি স্থাপন।
- ১৮৯১: বেঙ্গল মিলিটারি পুলিশ নামকরণ।
- ১৯২০: ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার্স রাইফেলস নামকরণ।
- ১৯৪৭: ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) নামকরণ।
- ১৯৭২: বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) নামকরণ।
- ২০১১: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নামকরণ।
বিডিআর বিদ্রোহ (২০০৯):
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি, ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদস্যদের একটি দল বিদ্রোহ করে। এই বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন, যার মধ্যে বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও ছিলেন। বিদ্রোহীরা তাদের অবস্থান দখল করে, জিম্মি নিয়ে, সম্পত্তি লুট করে এবং অসংখ্য অপরাধ করে। বিদ্রোহের পর, বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে বিজিবি করা হয়। বিদ্রোহের কারণ ছিল বেতন বোনাস আত্মসাৎ, দুর্নীতি, এবং উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের প্রভাব। বিদ্রোহীদের ২২ দফা দাবির মধ্যে ছিল বেতন বৃদ্ধি, পদোন্নতি এবং সেনা কর্মকর্তাদের অপসারণ।
বিচার ও ন্যায়বিচার:
বিদ্রোহের পর ব্যাপক বিচার কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। মানবাধিকার সংস্থা বিভিন্ন ত্রুটি ও অনিয়মের অভিযোগ করে।
পুনর্গঠন:
বিডিআর বিদ্রোহের পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আইন ২০১০ পাস হয়। এই আইন বাহিনীর কাঠামো, কার্যক্রম ও দায়িত্ব পুনর্গঠন করে, নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- বিজিবি বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত একটি আধা-সামরিক বাহিনী।
- ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহ একটি নৃশংস ঘটনা ছিল যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত।
- বিদ্রোহের পর বিডিআর-কে বিজিবি-তে রূপান্তরিত করে পুনর্গঠন করা হয়।
- বিদ্রোহের বিচার কাজ বিতর্কিত ও মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্থাপন করে।
স্থান: ঢাকা, পিলখানা
ব্যক্তি: মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ (বিডিআরের প্রধান)
সংস্থা: বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি), বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন
ট্যাগ: বিডিআর, বিজিবি, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, সীমান্তরক্ষী বাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী, বিদ্রোহ, ২০০৯ বিডিআর বিদ্রোহ