বাংলাদেশ ডাক বিভাগ: একটি ঐতিহাসিক যাত্রার কাহিনী
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ দেশের ডাক সেবা ব্যবস্থাপনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি সরকারি সংস্থা। এটি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে। শতাব্দী প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস রয়েছে ব্রিটিশ শাসনামলেও। মুঘল আমল থেকে শুরু করে বর্তমান ডিজিটাল যুগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ভূমিকা বিশাল ও গুরুত্বপূর্ণ।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
১৩শ শতকে দিল্লি সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দীন আইবক বঙ্গে প্রথম ডাক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সুলতান আলাউদ্দিন খলজী ১২৯৬ সালে ‘মাহাকামা-ই-বারিদ’ নামে একটি ডাক বিভাগ গঠন করেন। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর বার্তা বহন করার জন্য পায়রা ব্যবহারের প্রচলন করেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলেও ডাক ব্যবস্থা অব্যাহত ছিল, ১৭৭৪ সালের ১৭ মার্চ কলকাতায় জেনারেল পোস্ট অফিস স্থাপিত হয়। ১৮৫৪ সালের ১ অক্টোবর বঙ্গ ও ভারতে প্রথম ডাকটিকিট প্রবর্তিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়:
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়, বাংলাদেশের সাময়িক সরকার ৫০টি ফিল্ড পোস্ট অফিস স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ৬৬৬৭টি অফিস ও ২৫ হাজার কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ডাকবিভাগ আধুনিক ডাক সেবা ও ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আধুনিক সেবা:
বর্তমানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ডাক, মানি অর্ডার, ই-পোস্ট, ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস (EMTS), পোস্টাল ক্যাশ কার্ড, ‘নগদ’ এবং ‘ডাক টাকা’ নামক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে। প্রযুক্তির সাহায্যে ডাক বিভাগ তার সেবায় আধুনিকায়ন এবং বিস্তৃতি সাধন করছে।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
- ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালে স্থাপিত সাময়িক সরকারের ডাক সেবা।
- ২০০০ সাল থেকে ‘ই-পোস্ট’ সেবার প্রবর্তন।
- ২০১০ সালে ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস (EMTS) এবং পোস্টাল ক্যাশ কার্ডের চালু।
- ২০১৮ সালে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস উদ্যোগ।
- প্রায় ৯,৮৮৬ টি ডাকঘর ও ৪০,০০০ এরও বেশি কর্মচারী (২০১৭ সালের হিসাব)।
অবশ্যই, এই প্রবন্ধে উল্লেখিত তথ্য সীমিত; অধিক তথ্য পাওয়া গেলে এই প্রবন্ধটি আরও বিস্তৃত করা হবে।