বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বাকি) বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী একটি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ১৯০৮ সালে ঢাকায় কৃষি গবেষণাগার হিসেবে যাত্রা শুরু করে, বেঙ্গল কৃষি বিভাগের অধীনে। ১৯৭৩ সালের ৫ই এপ্রিল রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী এর নামকরণ করা হয় ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে এটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে। প্রাথমিকভাবে ফার্মগেটের কাছে অবস্থিত ছিল, পরবর্তীতে গবেষণা অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে ষাটের দশকে জয়দেবপুরে স্থানান্তরিত হয় এবং ১৯৮০ সালে স্থানান্তর সম্পন্ন হয়।

বাকি ২০৫ টিরও বেশি কৃষি বিষয়ক ফসলের গবেষণা পরিচালনা করে। ধান, পাট, ইক্ষু ও চা ব্যতীত অন্যান্য সকল শস্যের ওপর গবেষণার দায়িত্ব বহন করে। জয়দেবপুরের কেন্দ্রীয় স্টেশন (১৬৫ হেক্টর) ছাড়াও ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং ২৪টি উপকেন্দ্র রয়েছে। কন্দ-ফসল, গম, উদ্যান, ডাল, তৈলশস্য এবং মসলা - এই ৬টি ফসলভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। বাকি গম, আলু, সরিষা ও শাকসবজি উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে এবং ১৭২ টিরও বেশি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে।

বাকির গবেষণা বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে: কৃষিতত্ত্ব, মৃত্তিকাবিজ্ঞান, কীটতত্ত্ব, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব, কৃষি অর্থনীতি, খামার যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়াকরণ প্রকৌশল, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, উদ্ভিদ প্রজনন, শস্য-সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি এবং সরেজমিন খামার গবেষণা। বাকির তত্ত্বাবধানে ৩ টি কৃষি কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বাকির সার্বিক ব্যবস্থাপনা ১২ সদস্যের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের উপর ন্যস্ত। মহাপরিচালক প্রধান নির্বাহী এবং ৭১৫ জন বিজ্ঞানী ও ৩,৫৪৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এর সাথে যুক্ত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থার সাথে বাকির গবেষণা সহযোগিতা রয়েছে। ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • বাংলাদেশের কৃষি গবেষণার জন্য অগ্রণী প্রতিষ্ঠান
  • ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত, ১৯৭৩ সালে স্বায়ত্তশাসিত
  • জয়দেবপুরে অবস্থিত, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে
  • ২০০+ এর বেশি ফসলের গবেষণা
  • অনেক উন্নত জাত উদ্ভাবন