বাংলা সংস্কৃতি বা বাঙালি সংস্কৃতি একটি সমৃদ্ধ এবং বহুমুখী ঐতিহ্য, যা বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসামের বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীর জীবনধারা, রীতিনীতি, বিশ্বাস, শিল্পকলা এবং ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে গঠিত। এই সংস্কৃতি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান ধর্মের প্রভাবসহ কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে।
ভাষা ও সাহিত্য: বাংলা ভাষা এবং এর সাহিত্য হলো বাংলা সংস্কৃতির মূল ভিত্তি। চর্যাপদ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, হুমায়ূন আহমেদ প্রভৃতি বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের অবদান বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বমানে সমৃদ্ধ করেছে। লোকসাহিত্য, কাব্য, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ-সবকিছুই এই সাহিত্যে সমৃদ্ধ।
সংগীত: রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, বাউল সংগীত, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, জারিগান, সারিগান ইত্যাদি লোকসংগীতের ধারা বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম আকর্ষণ। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই গানগুলিকে ধারণ করে চলেছে।
নৃত্য: বাংলাদেশের নৃত্যকলার রয়েছে একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। লোকনৃত্য থেকে শুরু করে কাত্থাক, ভারতনাট্যম প্রভৃতি শাস্ত্রীয় নৃত্য এই অঞ্চলে চর্চা করা হয়।
শিল্পকলা: পটচিত্র, আল্পনা, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, ধাতুশিল্প প্রভৃতি লোকশিল্প এবং আধুনিক চিত্রকলার ব্যাপক চর্চা বাংলার সংস্কৃতিতে প্রতিফলিত হয়।
খাদ্য: ভাত, মাছ, ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের মশলা বাংলাদেশের খাবারের প্রধান উপাদান। পিঠা, মিষ্টান্ন ইত্যাদিও খুবই জনপ্রিয়।
পোশাক: শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার কামিজ প্রভৃতি ঐতিহ্যবাহী পোশাকের পাশাপাশি আধুনিক পোশাকের প্রচলনও রয়েছে।
উৎসব: ঈদ, দুর্গাপূজা, পহেলা বৈশাখ, বড়দিন, বুদ্ধ পূর্ণিমা প্রভৃতি উৎসব বাংলাদেশের মানুষের জীবনে আনন্দ ও ঐক্যের বার্তা বহন করে।
খেলাধুলা: লাঠিখেলা, কাবাডি, নৌকা বাইচ, ক্রিকেট, ফুটবল প্রভৃতি খেলাধুলা বাংলাদেশের সংস্কৃতির অংশ।
স্থাপত্য: প্রাচীন মন্দির, মসজিদ, মহাবিহার এবং আধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বহন করে।
আধুনিক প্রভাব: বিশ্বায়ন এবং আধুনিকতার প্রভাব বাংলা সংস্কৃতির ওপর পড়লেও, এর মৌলিক উপাদানগুলি এখনও টিকে আছে এবং বিকশিত হচ্ছে।
এই সংস্কৃতির বিশালত্ব ও সমৃদ্ধতার কারণে এখানে সব বিষয় আলোচনা করা সম্ভব নয়। আমরা আরও তথ্য দিয়ে এই নিবন্ধটিকে আপডেট করবো।