মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান, একজন অল্পবয়সী কিন্তু দক্ষ বাংলাদেশী দাবা খেলোয়াড়। ২০০৩ সালে জন্মগ্রহণকারী ফাহাদ ১০ বছর বয়সে ফিডে মাস্টার হিসেবে খেতাব লাভ করেন, যা অসাধারণ এক কৃতিত্ব। তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা তখন ৪০ বছরেরও বেশি বয়সী ছিলেন। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়ার পর থেকে তিনি গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার জন্য অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালে তিনি দাবা বিশ্বকাপের জন্যও যোগ্যতা অর্জন করেন, যেখানে প্রথম রাউন্ডেই পরাজিত হন। তার প্রশিক্ষক ছিলেন ইগর রাউসিস, কিন্তু পরে রাউসিসের সাথে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়।
ফাহাদ রহমানের গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম অর্জনের পথে বার বার হতাশার সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনেকবারই এক পয়েন্ট কিংবা আধা পয়েন্টের জন্য নর্ম পেতে ব্যর্থ হন। তবে অবশেষে, ২০২৩ সালের ৩১শে মার্চ ভিয়েতনামের হ্যানয় গ্র্যান্ড মাস্টার-৩ দাবা প্রতিযোগিতায় ৯ খেলায় ৭ পয়েন্ট অর্জন করে তিনি গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার প্রথম নর্ম অর্জন করেন। এই সাফল্যে তিনি ফিলিপাইনের আন্তর্জাতিক মাস্টার কুইজন ডানিয়েলের সাথে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়নও হন।
ফাহাদ বারবার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেও নর্ম অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ হিসেবে মানসিক চাপকে দায়ী করেন। বিদেশে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য অর্থের অভাবও তাঁর সামনে বড় এক চ্যালেঞ্জ। তিনি দেশে আরও দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন। গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পাওয়ার জন্য তাকে আরও দুটি নর্ম এবং ২৫০০ রেটিং অর্জন করতে হবে। তিনি মেডিটেশন ও শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে নিজেকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চান।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফাহাদের অংশগ্রহণের কথা বিবিসি-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত ৪৫তম বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডেও তিনি অংশ নেন। তিনি দুবাইয়ে পুলিশ গ্লোবাল দাবা টুর্নামেন্টেও অংশগ্রহণ করে দুর্দান্ত খেলেছেন।
এই তরুণ প্রতিভার গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব অর্জনের যাত্রা অব্যাহত আছে, আর সামনে অপেক্ষা করছে অনেক চ্যালেঞ্জ ও সাফল্য।