আহসানউল্লাহ মাস্টার: একজন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও রাজনীতিবিদের জীবনী
আহসানউল্লাহ মাস্টার (১৯৫০-২০০৪) ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, যিনি শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি ১৯৫০ সালের ৯ই নভেম্বর গাজীপুর জেলার পূবাইল উপজেলার হায়দারাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শাহ্ সুফি মো. আবদুল কাদের এবং মাতা রুছমতের নেছা।
শিক্ষা জীবন:
তার শিক্ষা জীবন শুরু হয় হায়দারাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে টঙ্গী হাইস্কুল থেকে ১৯৬৫ সালে এসএসসি এবং সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে ১৯৭০ সালে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম.এ মজিদ মিয়া হাইস্কুলে যোগ দেন একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি এ স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং ১৯৮৪ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনৈতিক জীবন ও মুক্তিযুদ্ধ:
ছাত্রজীবন থেকেই আহসানউল্লাহ মাস্টার ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬২ সালের হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১১ দফা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে অংশগ্রহণ করেন। ৫ই মার্চ টঙ্গীতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শ্রমিক আন্দোলনে এবং ১৯শে মার্চ জয়দেবপুর সেনানিবাসে বাঙালি সৈনিকদের নিরস্ত্র করতে আসা পাকিস্তানি সৈন্যদের বাধা প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি আহত হন এবং ভারতের দেরাদুনে গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পূবাইল, টঙ্গী, ছয়দানা সহ বিভিন্ন স্থানে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
স্বাধীনতার পর আহসানউল্লাহ মাস্টার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৯৮৩ ও ১৯৮৮ সালে পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে তিনি গাজীপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বিলস, টঙ্গী শিক্ষক সমিতি, এবং বাংলাদেশ উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
মৃত্যু:
‘ভাওয়াল বীর’ হিসেবে পরিচিত আহসানউল্লাহ মাস্টারকে ২০০৪ সালের ৭ই মে সন্ত্রাসবাদীরা হত্যা করে। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালে তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রদান করে।
আহসানউল্লাহ মাস্টার ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ।
তিনি ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৪ সালে নিহত হন।
মুক্তিযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
তিনি গাজীপুর-২ আসন থেকে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০২১ সালে তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়।
আহসানউল্লাহ মাস্টার: একজন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক এবং রাজনীতিবিদের জীবনী, মুক্তিযুদ্ধে অবদান এবং রাজনৈতিক কর্মজীবন সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), টঙ্গী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতি
আহসানউল্লাহ মাস্টার, শাহ্ সুফি মো. আবদুল কাদের, রুছমতের নেছা, মিসেস ফরিদা আহসান, মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বঙ্গবন্ধু
গাজীপুর, পূবাইল, হায়দারাবাদ, টঙ্গী, নোয়াগাঁও, জয়দেবপুর, দেরাদুন, ছয়দানা
আহসানউল্লাহ মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, গাজীপুর, বাংলাদেশের ইতিহাস, স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বাধীনতা পদক