দাবা একটি জনপ্রিয় বোর্ড গেম, যেখানে দুইজন খেলোয়াড় ৮x৮ বর্গক্ষেত্রের বোর্ডে ১৬টি করে গুটি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। প্রতিটি দলের গুটির মধ্যে রয়েছে একটি রাজা, একটি মন্ত্রী, দুটি নৌকা, দুটি হাতি, দুটি ঘোড়া এবং আটটি সৈন্য। খেলার লক্ষ্য হল প্রতিপক্ষের রাজাকে ‘চেকমেট’ করে পরাজিত করা।
দাবার উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, বেশিরভাগ ঐতিহাসিকের মতে এর উৎপত্তিস্থল প্রাচীন ভারত। ষষ্ঠ শতাব্দীর আগে ভারতে ‘চতুরঙ্গ’ নামে এর এক রূপ প্রচলিত ছিল। পারস্যে এটি ‘শতরঞ্জ’ নামে পরিচিত হয় এবং পরবর্তীতে আরব ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। ১৫শ শতকে ইউরোপে এর আধুনিক রূপের উন্নয়ন হয়।
আধুনিক দাবা খেলায় রয়েছে বিভিন্ন কৌশল ও কলাকৌশল। প্রতিটি গুটির নির্দিষ্ট চলাচলের নিয়ম রয়েছে এবং খেলার ধারা পরিবর্তন করার জন্য খেলোয়াড়রা কৌশলগতভাবে গুটি স্থানান্তর করে।
১৯শ শতকে দাবা সংগঠিত খেলা হিসেবে আবির্ভূত হয়। বিশ্ব দাবা ফেডারেশন (FIDE) আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ১৮৮৬ সালে উইলহেলম স্টেইনিটজ প্রথম বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন হন। বর্তমানে গুকেশ ডি. এই খেতাবের অধিকারী। দাবা বিভিন্ন বয়সভেদে বিভিন্ন বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, যেমন মহিলা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ইত্যাদি। আজকাল অনলাইন দাবাও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বাংলাদেশে দাবা খেলার প্রসারে ড. কাজী মোতাহার হোসেনের অবদান অপরিসীম। তাঁর নামে আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান, রানী হামিদ, রিফাত বিন সাত্তার প্রমুখ বাংলাদেশের বিশিষ্ট দাবাড়ু।