ফজলুল কাদের

চট্টগ্রামের গহীরা গ্রামে ১৯১৯ সালের ২৬শে মার্চ জন্মগ্রহণকারী ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন একজন প্রভাবশালী রাজনীতিক। কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ কলেজ থেকে শিক্ষা লাভের পর, তিনি ১৯৪১ সালে অল ইন্ডিয়া মুসলিম স্টুডেন্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪২ সালে ভারতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে গ্রেপ্তার হলেও, তিনি মুসলিম লীগে যোগদান করে রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৮ সালে মুসলিম লীগ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ১৯৫৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে মুসলিম লীগের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। ১৯৬২ সালে মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আইয়ুব খানের মন্ত্রিসভায় কৃষি, পূর্ত, শিক্ষা, তথ্য ও শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে কনভেনশন মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে জাতীয় পরিষদের সদস্যপদ বাতিল হলেও, পরবর্তী উপ-নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে ১৯৬৩ সালের ২৯শে নভেম্বর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে পুনরায় জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হলেও, ১৯৬৬ সালে দলীয় স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে কনভেনশন মুসলিম লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খান সরকারের পতনের পর, কনভেনশন মুসলিম লীগ বিভক্ত হলে তার এক অংশের সভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা কর্মসূচি এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের তীব্র বিরোধী ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করেন এবং চট্টগ্রামে রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৭৩ সালের ১৮ই জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি চট্টগ্রামে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন সমাজকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডেও অবদান রাখেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯১৯ সালে চট্টগ্রামে জন্ম
  • কলকাতা থেকে শিক্ষা
  • মুসলিম লীগে যোগদান
  • পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য ও স্পিকার
  • মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা
  • ১৯৭৩ সালে মৃত্যু

গণমাধ্যমে - ফজলুল কাদের

পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ফজলুল কাদের ৫৪ বছরে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ৫৪ গুণ বৃদ্ধি এবং খাদ্য উৎপাদন ৩ গুণ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে টেকসই কৃষির উপর জোর দেন।