পেস বোলিং: ক্রিকেটের রাজকীয় খেলার অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হলো পেস বোলিং। এটি ফাস্ট বোলিং নামেও পরিচিত। স্পিন বোলিংয়ের বিপরীতে, পেস বোলিংয়ে বোলার বলকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে নিক্ষেপ করে। এই দ্রুতগতির বল ব্যাটসম্যানের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। পেস বোলিংয়ে দক্ষ বোলারদের ফাস্ট বোলার, ফাস্টম্যান, পেস বোলার, কিংবা ডি নামে ডাকা হয়। সুইং এবং সিম বোলিং এর মতো কৌশলও পেস বোলিংয়ের সাথে যুক্ত।
ঐতিহাসিক কিছু বিখ্যাত পেস বোলারের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে যেমন: ডেনিস লিলি, ব্রেট লি, শেন বন্ড, ইমরান খান, কপিল দেব, কার্টলি এমব্রোস, ম্যালকম মার্শাল, রিচার্ড হ্যাডলি, অ্যালান ডোনাল্ড, গ্লেন ম্যাকগ্রা, শন পোলক, শোয়েব আখতার। আধুনিক সময়ের মুস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, ওয়াহাব রিয়াজ, এবং মিচেল স্টার্ক এর মতো বোলাররাও দারুণ পেস বোলিং করে থাকেন।
পেস বোলিংয়ে বলের গতিবেগ সাধারণতঃ ১৩৬ থেকে ১৫০ কিমি/ঘণ্টা (৮৫ থেকে ৯৫ মাইল/ঘণ্টা) পর্যন্ত হয়। শোয়েব আখতার ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬১.৩ কিমি/ঘণ্টা (১০০.২ মাইল/ঘণ্টা) গতিবেগে বল করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। জেফ থমসন, ব্রেট লি এবং শন টেইটও ১০০ মাইল/ঘণ্টা গতিবেগে বল করার কীর্তি অর্জন করেছেন।
অনেক ক্রিকেট খেলুড়ে দেশে পেস বোলারদের দলের বোলিং আক্রমণের প্রধান অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তারা স্পিনারদের সহায়তা করে এবং ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ সৃষ্টি করে। ভারতীয় উপমহাদেশে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোতে পেস বোলিংয়ের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও এই দেশগুলোর পিচ সাধারণত স্পিনারদের জন্য বেশি উপযোগী, তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক সফল স্পিনার (মুত্তিয়া মুরালিধরন, শেন ওয়ার্ন, ইত্যাদি) এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে।
পেস বোলিংয়ে সফল হতে, তরুণ বোলারদের গতির উপর মনোযোগ দিতে হয়। পরিণত বোলাররা সুইং ও সিম বোলিং এর কৌশলও ব্যবহার করতে পারে। একজন দক্ষ পেস বোলার বিভিন্ন ধরণের বল, যেমন ফাস্ট, সুইং, সিম এবং অফ-কাটার, ব্যবহার করতে পারে।
পেস বোলিংয়ে বলকে সঠিকভাবে ধরা এবং গ্রিপ করা, যথেষ্ট দূরত্ব থেকে বল নিক্ষেপ করা এবং শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পেস বোলিং শারীরিকভাবে খুবই কষ্টসাধ্য; পা, পিঠ, এবং কাঁধে চাপের কারণে আঘাতের ঝুঁকি বেশি থাকে।