ঢাকা নগর পরিবহন ও ধ্রুব আলম: একটি নতুন পদক্ষেপ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার জনবহুল রাস্তায় গণপরিবহনের অবস্থা সর্বদা এক আক্ষেপের বিষয়। যাত্রীদের যাতায়াত সুগম ও নিরাপদ করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই তা ব্যর্থ হয়েছে। এমন এক ব্যর্থ প্রকল্প ছিল ২০২১ সালে ঘাটারচর থেকে কাচপুর পর্যন্ত চালু হওয়া ঢাকা নগর পরিবহন। এই প্রকল্পের ব্যর্থতার পর, নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে ঢাকা নগর পরিবহন পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)-এর প্রকল্প পরিচালক ধ্রুব আলম।
ধ্রুব আলম জানিয়েছেন, ৪২টি রুটে ধাপে ধাপে ঢাকা নগর পরিবহন চালু করা হবে। বর্তমানে ৪২টি রুটেই আবেদন করা যাচ্ছে এবং ৪০টিরও বেশি কোম্পানি থেকে প্রায় হাজারখানেক বাসের আবেদন জমা পড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারী-মার্চের মধ্যে পরিকল্পিত রুটগুলিতে বাস চলাচল শুরু হবে। প্রতিটি রুটে একটি করে কোম্পানির বাস চলাচল করবে। যাত্রীরা নির্দিষ্ট স্টপেজে উঠা-নামা করতে পারবেন এবং বাসে জিপিএস ট্র্যাকিং ব্যবস্থা থাকবে। ডিজিটাল টিকেটিং ব্যবস্থা এবং আগামী জুন থেকে র্যাপিড পাসের মাধ্যমেও যাত্রীরা পরিবহন ব্যবহার করতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে বাসগুলিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
পূর্বের প্রকল্প ব্যর্থতার কারণ হিসেবে ধ্রুব আলম উল্লেখ করেছেন তৎকালীন বাস মালিক সমিতি এবং প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্তদের সদিচ্ছার অভাব। তবে, সরকার পরিবর্তনের পর ডিটিসিএ আবারো এই প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছে এবং প্রকল্পটিকে বাস্তবসম্মত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক মনে করেন, এই ধরনের প্রকল্প সফল করার জন্য রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির পাশাপাশি একটি আলাদা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার প্রয়োজন। নিয়ন্ত্রণের অভাবে একচেটিয়া সিন্ডিকেট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা শহরে ৩৪টি এবং ঢাকার বাইরে শহরতলি পরিবহন নামে ৮টি রুটে মোট ৪২টি রুটে বাস চলাচল করবে। এই উদ্যোগ ঢাকা নগরের গণপরিবহন ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে, তবে সফলতা অর্জনের জন্য সবার সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।