দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ১৩ এপ্রিল ২০২২ সালের পূর্বে এটি একটি একক জেলা হিসেবে পরিচিত ছিল, পরবর্তীতে তা নিচু দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান ও উচ্চ দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলায় বিভক্ত হয়। গোমল ও তোচি নদীর মধ্যবর্তী এ অঞ্চলটি প্রায় ১১,৫৮৫ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে অবস্থিত। পেশোয়ারের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের ভূপ্রকৃতি পাহাড়ী ও উঁচু-নিচু।
ঐতিহাসিকভাবে, ১৮৯৩ সাল থেকে ব্রিটিশ শাসনের বাইরে এটি একটি স্বাধীন উপজাতীয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশরা এ অঞ্চলের যোদ্ধাদের ভয়াবহ খ্যাতির কারণে একে "হেলস ডোর নক্কার" নামে অভিহিত করেছিল। এ অঞ্চলে প্রধানত ওয়াজির ও মাহসুদ উপজাতি বাস করে, যারা পশতু ভাষায় কথা বলে। ঐতিহাসিকভাবে, তারা যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত এবং তাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত প্রায়শই ঘটে থাকে।
২০ শতক জুড়ে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামরিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। ফকির অফ ইপি-র মতো ব্যক্তিবর্গের প্রভাব এখানে লক্ষ্যনীয় ছিল। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এ অঞ্চলে তালিবানদের প্রভাব বৃদ্ধি রোধে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে ২০১০ সালে ব্যাপক সামরিক অভিযান পরিচালিত হয়। এ অঞ্চলে আল-কায়েদার সক্রিয়তাও লক্ষ্যনীয় ছিল।
অর্থনৈতিকভাবে, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জনগোষ্ঠী প্রধানত পশুপালন, কৃষিকাজ এবং স্থানীয় কুটির শিল্পের উপর নির্ভরশীল। কয়লা, তামা ও ক্রোমাইটের মতো খনিজ সম্পদ এখানে আছে। ওয়ান্না জেলা সদর হিসেবে পরিচিত।
দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জনসংখ্যাগত তথ্য ২০২৩ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, প্রায় ৮৮৮,৬৭৫। পশতু ভাষা এখানকার প্রধান ভাষা। শিক্ষার হার অপেক্ষাকৃত কম। এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, জীবনযাত্রা এবং পোশাক-আশাকের বৈশিষ্ট্যও লক্ষনীয়।