তালেব নামটি একাধিক ব্যক্তি ও ঘটনার সাথে জড়িত। এই লেখা তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করবে।
- *১. খন্দকার আবু তালেব (১৯২১-১৯৭১):** একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও শহীদ বুদ্ধিজীবী। তিনি ১৯২১ সালের ২৩ মার্চ সাতক্ষীরা জেলার সাতানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম খন্দকার আবদুর রউফ এবং মাতার নাম রোকেয়া খাতুন। কলকাতা রিপন কলেজ (বর্তমান সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে আই.এ. এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.কম ও এল.এল.বি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দৈনিক আজাদ, দৈনিক ইনসাফ, পাকিস্তান অবজারভার, দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক, ও পয়গাম প্রভৃতি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন এবং ১৯৬১-৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ‘লুব্ধক’ ছদ্মনামে তিনি জনপ্রিয় কলাম লিখতেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং ২৯ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন। তার মৃতদেহ মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁর নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
- *২. মির্জা আবু তালেব খান (১৭৫২-১৮০৬):** প্রথম দিকের ভারতীয় পর্যটকদের একজন। তিনি ইউরোপ ভ্রমণ করে ‘মাসায়ের তালেবি ফি বালাদ আফরেঞ্জি’ (ইউরোপে তালেবের ভ্রমণবৃত্তান্ত) নামক গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থটি পরবর্তীতে ইংরেজিতে অনুবাদ হয়। তাঁর জন্ম লক্ষ্ণৌতে। তিনি নওয়াব আসফউদ্দৌলার অধীনে চাকরি করেন। তার ভ্রমণ বৃত্তান্ত ইউরোপের রাজনীতি, সংস্কৃতি এবং সমাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।
- *৩. আবু তালেব (জন্ম: ১৯৪৮ - মৃত্যু: ১৯৭১):** বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কালুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং সাতক্ষীরায় চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বীর উত্তম খেতাব লাভ করেন। ৮ নম্বর সেক্টরের হাকিমপুর সাবসেক্টরে এবং খুলনার বৈকালী ও সাতক্ষীরার ভোমরায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে শহীদ হন।
- *৪. আবু তালিব (মুহাম্মদ (সা.) এর চাচা):** ইসলামের নবী মুহাম্মদের চাচা। তিনি মুহাম্মদের লালন-পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং শো'বে আবু তালিব নামক ঘটনায় মুহাম্মদ ও বনু হাশিম গোত্রকে রক্ষা করেন। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন নি।