তারাগাছ (বৈজ্ঞানিক নাম: Alpinia nigra) দক্ষিণ এশিয়ার একটি ভেষজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশসহ ভারত থেকে মালয়েশিয়া পর্যন্ত এটি বিস্তৃত। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে জলাভূমি, খাল ও নালার পাড়ে, নিচু ভূমিতে এটি বেশি দেখা যায়। ২-৫ মিটার উঁচু এই গাছের পাতা আয়ত-ল্যান্সাকার এবং ফুল গোলাপী রঙের। মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এদের ফুল ও ফল ধারণ করে। রাইজোম ও বীজের মাধ্যমে এটি সহজেই বংশবিস্তার করে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে তারাগাছের কান্ডের মাঝের অংশ রান্নায় সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, এর রাইজোম বিভিন্ন ঔষধি গুণে ভরপুর। এটি টনিক, যৌনশক্তি বর্ধক, পাকস্থলীর শক্তি বর্ধক, মূত্রবর্ধক, কফ নির্গমক, বায়ুনাশক ও উত্তেজক হিসেবে কাজ করে। জ্বর, সর্দি, মাথা ব্যথা, বাতের ব্যথা, বহুমূত্র এবং যকৃতের জ্বালায় এটি ব্যবহার করা হয়। পাহাড়ি অঞ্চলে, বিশেষ করে চাকমা সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। কচি তারাগাছের গোড়া চিরে শাঁস বের করে তা মাছ, গোশত, শুঁটকির সাথে রান্না করে খাওয়া হয়।
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (২০১০) অনুসারে, তারাগাছের কোনো তাৎক্ষণিক বিপন্নতার আশঙ্কা নেই। তবে, এর সংরক্ষণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তারাগাছের বৈজ্ঞানিক নাম Alpinia nigra (Gaertn.) Burtt. এবং এটি Zingiberaceae পরিবারের অন্তর্গত।