বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) হলো জাতিসংঘের একটি সংস্থা যা বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে কাজ করে। ২০২৪ সালে, তারা মানবিক সাহায্যের জন্য ৪৯৬০ কোটি টাকা তুলতে চেয়েছিল, কিন্তু শুধুমাত্র ৪৬% অর্থ তুলতে পেরেছে। এর ফলে, তাদের অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, যার প্রভাব সিরিয়া সহ অনেক দেশের মানুষ উপলব্ধি করেছে। ডাব্লিউএফপি সিরিয়ায় ৬০ লাখ মানুষের কাছে খাদ্য সরবরাহ করে।
অনুদান কমার কারণ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত, চরম আবহাওয়া, এবং মুদ্রাস্ফীতি উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, এবং ইউরোপীয় কমিশন মিলে জাতিসংঘের তহবিলের ৫৮% অর্থ সাহায্য করে, যখন চীন, রাশিয়া, এবং ভারত মিলে মাত্র ১% সাহায্য করে। চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার তুলনায় তাদের সাহায্যের পরিমাণ নগণ্য। পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য কমেছিল।
২০০০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক প্রধান ছিলেন জ্যান ইগল্যান্ড। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, চীন ও ভারত যখন অলিম্পিক ও চন্দ্রাভিযানের জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারে, তখন বিশ্বের ক্ষুধার্ত মানুষদের জন্য অর্থ দিতে কেন দ্বিধা করবে? সাহায্যের দেরি এবং বিধি-নিষেধের কারণেও মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছাতে সমস্যা হয়।
২০২৪ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি, রোমে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডাব্লিউএফপি) ৩৬ সদস্যের কার্যনির্বাহী বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশকে এক বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত করে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ডাব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি, এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অসামান্য সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। তিনি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ার বিষয়েও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ডাব্লিউএফপি ২০১৯ সালে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং ক্ষুধা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বার্ষিক পুরষ্কারও প্রদানের ঘোষণা দেয়। ডাব্লিউএফপি ইথিওপিয়ার টিগ্রায় অঞ্চলে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় ২২ লাখ ফিলিস্তিনি ক্ষুধার জ্বালায় সাহায্য চাইছে।