ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী: জটিলতার জালে জড়ানো এক চিকিৎসকের জীবনী
ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী, একজন চিকিৎসক যিনি করোনা পরীক্ষার জালিয়াতি মামলায় জড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। দিনাজপুরের মেয়ে ডা. সাবরিনা ঢাকার শ্যামলীতে বেড়ে ওঠেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং পরে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী লাভ করেন।
ছাত্রজীবনে বন্ধুদের সাথে ডিসকো ও মদ্যপানে অভ্যস্ত ছিলেন এবং একজন সহপাঠীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও তা স্থায়ী হয়নি। পরবর্তীতে এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর সাথে বিয়ে করেন, যা থেকে দুই সন্তানের জনক হন। এই সংসারও স্থায়ী হয়নি।
২০১৪ সালে মোহাম্মদপুরের বিডিএম হাসপাতালে রোগী হিসাবে আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে পরিচয় হয় এবং ২০১৫ সালে তাঁর সাথে বিয়ে করেন। আরিফুল হক চৌধুরী জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী ছিলেন। বিয়ের পর দুজনে দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর সাথে সাথে সরকারি প্রকল্পে কাজ পেতে নানা তদবির করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগে রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন ডা. সাবরিনা জেকেজি হেলথকেয়ারের করোনা নমুনা সংগ্রহের কাজে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। জেকেজি হেলথকেয়ার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে ২০২০ সালে অভিযান চালানো হয় এবং আরিফুল হক চৌধুরী গ্রেপ্তার হন।
এই ঘটনার পর ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী জেকেজি হেলথকেয়ারের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন এবং তার ফেসবুক নাম পরিবর্তন করেন। তবে পরে তাকেও গ্রেফতার করা হয় এবং জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দেন। সাবরিনা তার বস ডা. কামরুল হাসান মিলনের সাথে ঘনিষ্ঠতা ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগের মুখোমুখি হন।
২০২২ সালের ১৯ জুলাই ঢাকার একটি আদালত করোনা পরীক্ষার জালিয়াতি মামলায় ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও আরিফুল হক চৌধুরীকে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দেন। তদন্তের সময় আরও অনেক অভিযোগ উঠে আসে যেমন- তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করার অভিযোগ। এই মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। সাবরিনার জীবনী ও ঘটনা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, আরও তথ্যের অপেক্ষায় রইলো।