জালাল মাতব্বর: একাধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বর্ণনা
প্রদত্ত লেখা অনুসারে, "জালাল মাতব্বর" নামটি দুজন ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারে:
১. জালালউদ্দীন মুহম্মদ শাহ (জাদু): পনেরো শতকের বাংলার সুলতান। তিনি হিন্দু ধর্মে জন্মগ্রহণ করেন এবং পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ১৪১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলার শাসক হিসেবে রাজত্ব শুরু করেন। ইলিয়াস শাহী বংশের পতনের পর একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতা দখল করেন এবং ১৬ বছর বাংলার সুলতান হিসেবে শাসন করেন। তার শাসনামলে বাংলা সম্পদশালী ও জনবহুল হয়ে ওঠে। তিনি তৈমুরি সাম্রাজ্য, মামলুক সালতানাত এবং মিং চীনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার শাসনকালে ফিরোজাবাদ পাণ্ডুয়া একটি জনবহুল ও সমৃদ্ধশালী শহরে পরিণত হয়। রাজধানী পাণ্ডুয়া থেকে গৌড়ে স্থানান্তরিত হয়। তার শাসন পূর্ব বাংলা ময়জম্মাবাদ (বর্তমান সুনামগঞ্জ) এবং দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা (বর্তমান চট্টগ্রাম) পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তিনি আরাকানকে বাংলার অধীনস্থ করেন এবং রাজ্যের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলোকে সুসংহত করেন। ১৪৩৩ খ্রিস্টাব্দে মারা যান এবং পাণ্ডুয়ায় সমাধিস্থ হন।
২. হযরত শাহ্জালাল (মুজার্রাদ ইয়েমেনী): বাংলাদেশের বিখ্যাত সুফি ও দরবেশ। তার পুরো নাম শাহ্জালাল মুজার্রাদ ইয়েমেনী, কুনিয়াত মুজাররদ। ৭০৩ হিজরী (১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দ) সালে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে আগমন করেন। সিলেট বিজয়ের মধ্য দিয়ে ইসলামের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার প্রতি জনসাধারণের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অতুলনীয়। ৭৪৬ হিজরী (১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দ) সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং সিলেটে সমাধিস্থ হন। তার জন্মস্থান ইয়েমেনের তাইজ নগরীর কুন্যা বলে মনে করা হয়।
উভয় জালালই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। প্রথম জালাল একজন রাজনৈতিক নেতা এবং দ্বিতীয় জালাল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন। লেখার সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উভয়ের জীবনী, শাসনকাল, কর্মকাণ্ড এবং মৃত্যুর তারিখ ভিন্ন।