জাপান সরকার: একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ
জাপান, পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপরাষ্ট্র, একটি সংসদীয় রাজতন্ত্রের অধীনে পরিচালিত হয়। এই রাষ্ট্রব্যবস্থায় সম্রাট রাষ্ট্রপ্রধান হলেও তাঁর ক্ষমতা মূলত আনুষ্ঠানিক এবং সীমিত। দেশের প্রকৃত শাসন ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রিসভার হাতে ন্যস্ত। ১৯৪৭ সালে প্রণীত সংবিধান অনুযায়ী জাপান সরকার পরিচালিত হয়। এটি একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র যার ৪৭ টি প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে।
জাপান সরকারের তিনটি প্রধান অংশ:
আইন বিভাগ: জাতীয় ডায়েট, যা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট (উচ্চকক্ষ: উপদেষ্টা পরিষদ এবং নিম্নকক্ষ: জনপ্রতিনিধি পরিষদ)। জনসাধারণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এই ডায়েট গঠন করে।
শাসন বিভাগ: প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় ডায়েট মনোনয়ন করে এবং সম্রাট তাকে নিয়োগ করেন।
বিচার বিভাগ: সুপ্রিম কোর্ট এবং অন্যান্য নিম্ন আদালত। বিচার বিভাগ শাসন ও আইন বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন।
জাপানের ইতিহাসে শোগুনদের শাসন:
মেইজি পুনর্গঠনের (১৮৬৮) পূর্বে জাপান বহু শতাব্দী ধরে সামরিক শাসক শোগুনদের দ্বারা শাসিত ছিল। শোগুনরা বংশানুক্রমিক সামরিক নেতা ছিলেন, যাদের হাতে প্রকৃত ক্ষমতা ছিল। সম্রাটের ক্ষমতা তখন আনুষ্ঠানিক ছিল।
মেইজি পুনর্গঠন ও সংবিধান:
মেইজি পুনর্গঠনের ফলে শোগুনদের শাসনের অবসান ঘটে এবং সম্রাটের ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৮৯ সালে মেইজি সংবিধান প্রণয়ন করা হয়, যা এশিয়ার প্রথম সংসদীয় ব্যবস্থার সূচনা করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর জাপান:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের বর্তমান সংবিধান (১৯৪৭) প্রণয়ন করা হয়। এটি একটি উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করে এবং সম্রাটের ক্ষমতা আরও সীমিত করে।
সাম্প্রতিককালে জাপান সরকারের কাজকর্ম:
জাপান সরকার বর্তমানে জনসংখ্যা হ্রাস, অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে চলেছে। এছাড়াও, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ জাপান সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে।