জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস: ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম। ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি ২০০৫ সালে পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। এর প্রধান ক্যাম্পাসটি ঢাকা শহরের ঐতিহাসিক পুরান ঢাকায়, বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। সীমিত আয়তনের এই ক্যাম্পাসে ৭ টি অনুষদ, ২টি ইনস্টিটিউট এবং ৩৮ টি বিভাগের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
জগন্নাথ কলেজ, যা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং অনেকেই শহীদ হয়েছেন। এই ক্যাম্পাসেই মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনা ঘটেছে, যা ইতিহাসের অংশ হিসেবে বিদ্যমান।
অবকাঠামো:
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ক্যাম্পাস ছোট হলেও, এতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান ভবন, প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন একাডেমিক ভবন রয়েছে। এছাড়াও ক্যাম্পাসে খেলার মাঠ, মুক্তমঞ্চ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সীমিত জায়গার কারণে আবাসিক হলের অভাব একটা বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কেরানীগঞ্জে একটি নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলছে।
শিক্ষার্থী আন্দোলন:
আবাসিক হলের অভাব, সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা এবং নানা অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। ২০০৯ সালে হল আন্দোলন একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের আশ্বাসে আন্দোলন অনেকটা কমেছে।
নতুন ক্যাম্পাস:
কেরানীগঞ্জে ২০০ একর জমির উপর বিশ্বমানের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলছে, যা শিক্ষার্থীদের বহু বছরের আন্দোলনের ফল। এখানে আধুনিক একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল, খেলার মাঠ, সুইমিং পুল ইত্যাদি থাকবে।
অবস্থান:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাস ঢাকার পুরান ঢাকায়, সদরঘাটের কাছে অবস্থিত। নতুন ক্যাম্পাস ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় তৈরি হচ্ছে।
উপসংহার:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধুমাত্র একাডেমিক শিক্ষার কেন্দ্র নয়; এটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী, শিক্ষার্থী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আশার আলো। নতুন ক্যাম্পাসের মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আরও উন্নত ও আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।