চুনারুঘাট থানা: হবিগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট
চুনারুঘাট থানা বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার অন্তর্গত একটি থানা। এটি উপজেলার ১টি পৌরসভা এবং ১০টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। থানার ইতিহাস ব্রিটিশ শাসনামলের সাথে জড়িত। ১৯১৪ সালের ১০ আগস্ট সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমাধীন মুছিকান্দি থানা প্রতিষ্ঠিত হয়, যা বর্তমান থানা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে খোয়াই নদীর তীরে অবস্থিত ছিল। যাতায়াতের অসুবিধার কারণে ১৯২২ সালে চুনারুঘাটে থানা সদর স্থানান্তরিত হয় এবং চুনারুঘাট থানা নামকরণ করা হয়।
চুনারুঘাটের ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
চুনারুঘাটের প্রাচীন নাম ছিল 'তরফ'। ব্যবসায়িক কারণে ত্রিপুরা রাজ্যের বণিকরা খোয়াই নদীপথে চুনাপাথর নিয়ে আসতেন। চুনাপাথরের ব্যবসা থেকেই 'চুনারুঘাট' নামের উৎপত্তি। চুনারুঘাট আয়তনে হবিগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, খোয়াই নদী, চা বাগান, এবং বিভিন্ন ফলমূলের জন্য এ অঞ্চল বিখ্যাত। পাইকপাড়া ইউনিয়নের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে আদিমকালীন মানুষের পাথরের হাতিয়ার আবিষ্কৃত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে চুনারুঘাট থানার ভূমিকা:
মুক্তিযুদ্ধে চুনারুঘাট ৪ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। মেজর কমান্ডার (অবঃ) সি আর দত্ত (বীরউত্তম) ছিলেন এই সেক্টরের কমান্ডার। এখানে রেমা চা-বাগান যুদ্ধ, নলুয়া চা-বাগান যুদ্ধ, কালেঙ্গা বনাঞ্চল যুদ্ধ, হরিণমায়া যুদ্ধ, নালমুখ রাজার যুদ্ধ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
চুনারুঘাটের প্রশাসনিক গঠন:
চুনারুঘাট থানার আওতাধীন চুনারুঘাট উপজেলার প্রায় ২,৬৭,০২০ জনসংখ্যা (প্রায়), এর মধ্যে পুরুষ ১,৩৫,১২০ জন এবং মহিলা ১,৩১,৯০০ জন। শিক্ষার হার ৪৮%। এখানে হবিগঞ্জি ভাষা ছাড়াও, ত্রিপুরা, ককবরক, উরাও, খাড়িয়া, সাওতাল, উড়্যিষা, মুন্ডা ভাষা প্রচলিত। ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা এ অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়।