গার্হস্থ্য হিংসা বা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি যা শুধুমাত্র শারীরিক আক্রমণ নয়, বরং ক্ষমতা প্রয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ কায়েমের উদ্দেশ্যে করা যেকোনো ধরনের আচরণকে বোঝায়। এটি স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, বন্ধুবান্ধব, অথবা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কিত পারিবারিক সদস্যদের মধ্যে ঘটতে পারে। শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক, যৌন, অর্থনৈতিক, এবং আইনগত নির্যাতনও গার্হস্থ্য হিংসার অন্তর্ভুক্ত।
গার্হস্থ্য হিংসার শিকার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা হন। তবে পুরুষ, শিশু, বয়োবৃদ্ধ, এবং এলজিবিটি+ ব্যক্তিরাও এর শিকার হতে পারেন। গর্ভবতী মহিলারা, বিচ্ছেদপ্রাপ্ত মহিলারা, এবং পঙ্গুত্ব ভোগী মহিলারা গার্হস্থ্য হিংসার ঝুঁকিতে বেশি থাকেন।
গার্হস্থ্য হিংসার লক্ষণগুলো হলো: অপমান ও লাঞ্ছনা, হুমকি, ভীতি প্রদর্শন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা, পরিবার ও বন্ধুদের সাথে দেখা করতে না দেওয়া, দোষারোপ করা, আর্থিক নিয়ন্ত্রণ, যৌন নির্যাতন, এবং শারীরিক আক্রমণ। অপব্যবহারকারীরা প্রায়ই তাদের কর্মকাণ্ড অস্বীকার করে বা শিকারকে দোষ দেয়।
ভারতে, গার্হস্থ্য সহিংসতা থেকে নারীদের সুরক্ষা আইন, ২০০৫ (Protection of Women from Domestic Violence Act, 2005) এই ধরণের অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি সরঞ্জাম। এই আইনের মাধ্যমে শিকাররা আইনি সুরক্ষা এবং সহায়তা পেতে পারে।
তবে আইনের প্রয়োগ ও সচেতনতার অভাব গার্হস্থ্য হিংসা রোধে বড় বাধা। সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনের কার্যকর প্রয়োগ, এবং সমাজের সকল স্তরের সহযোগিতা গার্হস্থ্য হিংসা দমনে অত্যন্ত জরুরী। শিকারদের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে, এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করে সাহায্য নেওয়া উচিত।