কুড়িগ্রাম জেলা: উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত রংপুর বিভাগের অন্তর্গত কুড়িগ্রাম জেলা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল। উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলা, পূর্বে ভারতের আসাম, এবং পশ্চিমে লালমনিরহাট ও রংপুর জেলা দিয়ে বেষ্টিত এই জেলার আয়তন ২,২৩৬.৯৪ বর্গকিলোমিটার। ৯টি উপজেলা, ১১টি থানা, ৩টি পৌরসভা, ৭৩টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং ২,৪৪৬টি গ্রাম নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম 'এ' শ্রেণীর জেলা হিসেবে পরিচিত।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
কুড়িগ্রামের নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। কিছু কিংবদন্তি মতে, কুড়িটি জেলে পরিবারের বসতি স্থাপনের কারণে এর নামকরণ কুড়িগ্রাম হয়েছে। আবার অন্য কিংবদন্তি অনুসারে, কুরি নামক একটি হিন্দু আদিবাসী গোষ্ঠীর বসতির জন্য এ নামকরণ। ১২ শতকের প্রথম দিকে সেন রাজবংশের শাসনকাল শুরু হয়, যাদের রাজধানী ছিল উলিপুর উপজেলার চত্রা গ্রামে। সেন রাজবংশের পতনের পর মুঘল যুগের আগমন ঘটে। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৭৫ সালের ২২ এপ্রিল কুড়িগ্রাম মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারী কুড়িগ্রাম জেলা হিসেবে উন্নীত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কুড়িগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু:
ব্রহ্মপুত্র (যমুনা), ধরলা ও তিস্তা-সহ বেশ কয়েকটি নদী কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। জেলাটি নদীবেষ্টিত সমতল ভূমি এবং চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত। গ্রীষ্মকালে উচ্চ এবং শীতকালে নিম্ন তাপমাত্রা বিশিষ্ট জেলাটি বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাতের অভিজ্ঞতা লাভ করে।
জনসংখ্যা ও অর্থনীতি:
২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম জেলার জনসংখ্যা প্রায় ২৩,২৯,১৬০ জন। অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর, ধান, গম, আলু, পাট, তামাক, সরিষা, সুপারী ইত্যাদি মূল অর্থকরী ফসল। এখানে ৮৯৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
শিক্ষা ও যোগাযোগ:
কুড়িগ্রামের শিক্ষার হার প্রায় ৪৪.৯৯%। জেলায় একটি সরকারি গণগ্রন্থাগার, কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১৬ই অক্টোবর ২০১৯ সাল থেকে রাজধানী ঢাকা থেকে 'কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস' নামে সেমি ননস্টপ ট্রেন চালু হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
ধরলা সেতু, উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ইত্যাদি।
আমরা কুড়িগ্রাম জেলা সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করে এই প্রবন্ধ আপডেট করব।