কুমিল্লা জেলা

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩:৪০ এএম
নামান্তরে:
Comilla District
Comilla
BD-08
Comilla zila
Cumilla District
কুমিল্লা জেলার অন্তর্ভুক্ত উপজেলা সমূহ
কুমিল্লা জেলা

কুমিল্লা জেলা: ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও উন্নয়নের এক অপূর্ব সমন্বয়

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত কুমিল্লা জেলা, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। প্রাচীন কালে সমতট জনপদের অংশ হিসেবে এর ইতিহাস গভীর। কমলাঙ্ক নামে পরিচিত এই অঞ্চলের নামকরণের পিছনে পদ্মফুলের দীঘির উল্লেখ রয়েছে। ঢাকা থেকে প্রায় ৯৬ কিমি এবং চট্টগ্রাম থেকে ১৪৮ কিমি দূরে অবস্থিত এই জেলা, খাদি কাপড় ও বিখ্যাত রসমালাইয়ের জন্য সারাদেশে পরিচিত।

ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:

কুমিল্লা জেলা ২৩°০২´ থেকে ২৪°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°৩৯´ থেকে ৯১°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে বিস্তৃত। মোট আয়তন ৩,০৮৭.৩৩ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেঘনা নদী ও নারায়ণগঞ্জ, দক্ষিণে ফেনী ও নোয়াখালী, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা এবং পশ্চিমে চাঁদপুর, মেঘনা নদী ও মুন্সীগঞ্জ জেলা অবস্থিত। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী জেলার জনসংখ্যা প্রায় ৬২,১২,২১৬ জন, জনসংখ্যার ঘনত্ব ১৯৭৪ জন/বর্গকিলোমিটার এবং সাক্ষরতার হার প্রায় ৮২%। ধর্মীয় বিভাজন অনুযায়ী, ৯৪.৬২% মুসলমান, ৫.২৬% হিন্দু এবং অল্প সংখ্যক বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মের অনুসারী বাস করেন।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দী থেকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা কুমিল্লা, পরবর্তীতে হরিকেল ও চন্দ্র রাজবংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৩৩ সালে বাংলার নবাব সুজাউদ্দিন খান ত্রিপুরা রাজ্য বিজয় করার পর এ অঞ্চল সুবাহ বাংলার অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ত্রিপুরা দখল করে। ১৭৯০ সালে ত্রিপুরা নামে একটি জেলার সৃষ্টি হয়, যার সদর কুমিল্লায় স্থাপিত হয়। ১৯৬০ সালে ত্রিপুরা জেলার নামকরণ করা হয় কুমিল্লা। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লার দুইটি মহকুমা চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে পৃথক জেলা হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লা ২ নং সেক্টরের অন্তর্গত ছিল।

অর্থনীতি ও শিল্প:

কুমিল্লার অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। দারিদ্র্যের হার প্রায় ২০.৬%। খাদি শিল্প কুমিল্লার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাঁশের বাঁশি, তাঁত শিল্প, কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প ও কারুশিল্প কুমিল্লার আরেকটি পরিচয়। ময়নামতির শীতল পাটিও অত্যন্ত বিখ্যাত। কুমিল্লায় বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড এর মূল স্থাপনা ও গ্যাস ফিল্ড রয়েছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা:

কুমিল্লায় সড়ক, রেল এবং নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক কুমিল্লা শহর দিয়ে অতিক্রম করেছে। কুমিল্লা রেলস্টেশন ও লাকসাম রেলস্টেশন জেলার প্রধান দুটি রেলওয়ে স্টেশন। দাউদকান্দি বাউশিয়া নদীবন্দর এবং ৩৪ টি ফেরিঘাট রয়েছে। কুমিল্লা বিমানবন্দর বর্তমানে বন্ধ আছে, তবে পুনরায় চালুর উদ্যোগ রয়েছে।

শিক্ষা ও সংস্কৃতি:

কুমিল্লা শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা জিলা স্কুল প্রভৃতি ঐতিহাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ময়নামতি লালমাই এর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পর্যটন কে আকর্ষণ করে।

উল্লেখযোগ্য স্থান:

ময়নামতি, লালমাই পাহাড়, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট, কোটবাড়ী, বিবিরবাজার স্থলবন্দর, কুমিল্লা বিমানবন্দর, গোমতী নদী, মেঘনা নদী, দাউদকান্দি বাউশিয়া নদীবন্দর।

তথ্যের অভাব:

উপরোক্ত তথ্য ছাড়াও কুমিল্লা জেলার আরও অনেক দিক রয়েছে যা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন। আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করে এই প্রবন্ধটি পরিবর্ধন করবো এবং আপনাকে পুনরায় অবহিত করব।

মূল তথ্যাবলী:

  • কুমিল্লা জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত।
  • খাদি কাপড় ও রসমালাইয়ের জন্য বিখ্যাত।
  • প্রাচীন সমতট জনপদের অংশ ছিল।
  • মুক্তিযুদ্ধে ২ নং সেক্টরের অন্তর্গত ছিল।
  • ময়নামতির প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পর্যটন আকর্ষণ।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।